গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনীর গুলি ছোড়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘পরিস্থিতির কারণে গোপালগঞ্জে গুলির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে চলমান ১৪৪ ধারা ধীরে ধীরে উঠিয়ে নেওয়া হবে।’
রোববার (২০ জুলাই) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সেনাবাহিনীর গুলি ছোড়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘যে সময় যে পরিস্থিতি, ওই সময় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যায় করলে গ্রেপ্তার হবে। আমি একটি কথাই বলেছি, কোনো অবস্থায় যেন দুষ্কৃতকারী ছাড় না পায়। আর যে অপরাধ করেনি, সে যেন ধরা না পড়ে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গোপালগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি তো আমি অস্বীকার করছি না। এটা তো রাজনীতি। রাজনীতি করতে গেলে তো অনেক কিছু অনেক সময়...আগে যখন আমরাও (রাজনীতি) করেছি, তখন ইউনিভার্সিটিতে তো কত ধরনের ঘটনা হয়েছে। ঘটনার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটি হচ্ছে আমাদের কথা, আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি কি না।’
গোপালগঞ্জের ঘটনায় মামলার বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ মামলা করবে কি করবে না, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা বলবে। গোপালগঞ্জে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না। যারা অন্যায় করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
এ সময় গোপালগঞ্জের ঘটনায় ৯টি শিশুকেও আটকে রাখা হয়েছে বলে তথ্য দেন একজন সাংবাদিক। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ রকম কোনো খবর আমার কাছে নেই।’
আগামী ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে প্রস্তুতি, আরও তো অনেক সময় রয়ে গেছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়ে গেছে, আমাদের ট্রেনিং হচ্ছে, আমরা ট্রেনিং করিয়ে দিচ্ছি। আমরা তো প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছি। আল্লায় দিলে (নির্বাচন) করতে কোনো অসুবিধা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে আমরা শুনলাম, তারা কীভাবে কাজ করছেন, আগে কী পরিস্থিতি ছিল, এখন কী পরিস্থিতি রয়েছে।’
এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সংঘর্ষের পর ওই জেলায় কারফিউ জারি করে সরকার। এখন কারফিউ প্রত্যাহার করে ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে। সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন