কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫, ১০:১৫ পিএম
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিমানবাহিনীর শ্রদ্ধা

নিহত শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা। ছবি : সংগৃহীত
নিহত শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিমানবাহিনী।

বুধবার (২৩ জুলাই) নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়ী গ্রামে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি এর পক্ষ থেকে এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।

বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী। নিজের জীবন উৎসর্গ করে যেভাবে তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রক্ষা করেছেন, তা চিরকাল সকলের হৃদয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এর আগে সোমবার (২১ জুলাই) বিমান বিধ্বস্তের পর আগুনের মধ্যে ক্লাসরুমের ভেতর থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের একে একে বাইরে নিয়ে আসেন মাহরিন চৌধুরী। প্রায় ২০ শিক্ষার্থীকে বাইরে বের করে আনতে পারলেও নিজে সময়মতো বের হতে পারেননি। এরপর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন তিনি।

এ ঘটনায় উদ্ধার করে তাকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান। তার শরীরের ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান চিকিৎসক।

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে স্বামী মনছুর হেলালের সঙ্গে কথা বলেন এই সাহসী শিক্ষিকা।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে মনছুর হেলাল বলেন, ‘বাচ্চারা যেদিক দিয়ে বের হবে, ওখানে সরাসরি এসে বিমানটি ক্রাশ করছে, তারপরে এক্সপ্লোশন হয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে। ঘটনার পর মাহরিন কিছু বাচ্চাকে বের করে নিয়ে আসে।’

আইসিউতে মাহরিনের শেষ কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইসিইউতে আমি তাকে বললাম, তুমি কেন এ কাজ করতে গেলা? সে বলল, আমার বাচ্চারা আমার সামনে সব পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি এটা কীভাবে সহ্য করি। ও (মাহরিন) সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, কিছু বাচ্চা বের করছে, আরও কিছু বাচ্চা বের করার চেষ্টায় ছিল। ঠিক এমন সময় বিকট শব্দে আরেকটি বিস্ফোরণ হয়। আর তাতেই তার পুরো শরীর পুড়ে যায়।’

মনছুর হেলাল বলেন, ‘লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার আগে আমাকে আগে বলল, আমার ডান হাতটা শক্ত করে ধরো। হাত ধরা যায় না, সব পুড়ে শেষ। ও বলল, তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না।’

স্বামীর হাত ধরে মাহরিন তখন বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাদের দেখো।’ জবাবে মনছুর হেলাল বলেন, ‘তোমার বাচ্চাদের এতিম করে গেলা। জবাবে সে বলে, কী করব, ওরাও তো আমার বাচ্চা, সবাই পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করব?’

মনসুর হেলাল আরও বলেন, ‘ওকে বাঁচাতে পারিনি। আমার দুটি ছোট ছোট বাচ্চা এতিম হয়ে গেল।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সুন্দরবন থেকে ৮০০ কেজি চিংড়িসহ ট্রলার জব্দ 

ঢাকায় মুষলধারে বৃষ্টি, সঙ্গে বজ্রপাত

নাটোরে সড়কে ৮ জন নিহত / ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক ট্রাকচালক গ্রেপ্তার

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : নিহতদের স্মরণে ঢাকা বারের দোয়া মাহফিল

জবিতে গবেষণা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

রাণীশংকৈলে বজ্রপাতে নৈশপ্রহরীর মৃত্যু 

সেই দুয়ারের আইপিও চূড়ান্তভাবে বাতিল

বিমানবাহিনী ও মাইলস্টোনের সমন্বয় সভা

প্রিজনভ্যানে আবেগাপ্লুত পলক, একজন বললেন ‘কাইন্দেন না’

মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা জিয়া

১০

জুলাইয়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এই ১০ ব্যাংকে

১১

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১২

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

১৩

লঘুচাপের আভাস, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা

১৪

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি / দগ্ধদের চিকিৎসায় ঢাকায় ভারতের মেডিকেল টিম

১৫

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২৭৬ আউটসোর্সিং কর্মচারীর আলটিমেটাম 

১৬

অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে পারে বাংলাদেশ!

১৭

ব্রুনাইতে বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল ভোলার জামালের

১৮

জামিন নিতে গিয়ে শিবিরের তোপের মুখে গ্রেপ্তার আ.লীগের দুই নেতা

১৯

কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক বাদ দিতে বলল বাংলাদেশ ব্যাংক

২০
X