কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আ.লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েও দল থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে বহিষ্কার করতে পারেনি : রাণা দাশগুপ্ত

রাজধানীর নারিন্দার মাধ্ব গৌড়ীয় মঠ এবং রমনা কালীবাড়ি পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য রাখছেন রাণা দাশগুপ্ত। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর নারিন্দার মাধ্ব গৌড়ীয় মঠ এবং রমনা কালীবাড়ি পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য রাখছেন রাণা দাশগুপ্ত। ছবি : কালবেলা

বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ সংবিধান ও আওয়ামী লীগ সবই হারিয়ে গেছে এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত বলেছেন, যে সংবিধানের জন্য মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ আত্মদান করেছেন, যে সংবিধান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়ে গেছেন, আজকের বাংলাদেশে সেই সংবিধান নেই।

তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বঙ্গবন্ধুর সংবিধানের মূলনীতি থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রকে বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজন করেছিলেন। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র ফিরে এলেও বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম রয়ে গেছে। আমরা এই সংবিধানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নারিন্দার মাধ্ব গৌড়ীয় মঠ এবং রমনা কালীবাড়ি পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেই এমন পরিবার ছিল না। আজকের বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই যে পরিবারে অন্তত একজন জামায়াত বা হেফাজত নাই। গত চার দশক ধরে রাষ্ট্রে যে অপরাজনীতির চর্চা চলেছে, তার ফল হিসেবে আজকের বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

প্রশাসনে জামায়াত-হেফাজত ঘাঁটি গেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যেসব সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে, সবটির পেছনে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভেতরে ঢুকে যাওয়া সাম্প্রদায়িক অংশও জড়িত। এই অপশক্তিকে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েও দল থেকে বহিষ্কার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী সাঈদী মারা যাওয়ার পরে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর আচরণে তা পরিষ্কার হয়েছে। অর্থাৎ আজকের আওয়ামী লীগও একাত্তরের বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়।

পৃথক এ দুটি সভায় রাণা দাশগুপ্ত আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান সংসদে সংখ্যালঘু সদস্য ২২ জন। তারা কার জন্য কবে কী ভূমিকা রাখলেন, আজ পর্যন্ত আমরা জানতেও পারলাম না। সম্প্রতি পাকিস্তানে একটি মন্দির ধ্বংসের প্রতিবাদে সেখানকার মাত্র একজন সংখ্যালঘু মেম্বার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করায় দেশটির তৎকালীন ইমরান খানের সরকার সেখানকার সংখ্যালঘুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করে দেন। অথচ ২২ জন সংসদ সদস্য গত ১৪ বছরে কিছুই করলেন না আমাদের জন্য। তাই এদের ওপর ভরসা না করে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সাতদফা দাবি আদায়ে রাজপথের আন্দোলনের উপরই নির্ভর করতে হবে। সমঅধিকার ও সমমর্যাদা ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে এ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই বলেও মনে করেন তিনি।

গৌড়ীয় মঠের সভাপতি গিরিধারী মোদীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন মঠের সাধারণ সম্পাদক উৎপল রায়, বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার, সাবেক সচিব অশোক মধাব রায়, ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, রবীন্দ্রনাথ বসু, শিপন বাড়াইক প্রমুখ।

রমনা কালীবাড়ি ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কালীবাড়ির সভাপতি উৎপল সাহা। বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি বাবুল বিশ্বাস, সুজন মণ্ডল, গোকুল সাহা, পরাণ কৃষ্ণ সাহা, হরিচাঁদ মন্দিরের সভাপতি অ্যাড. কালীপদ মৃধা, নৃপেন্দ্রনাথ হীরা, ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, বাপ্পাদিত্য বসু, কাজল কুমার দাস প্রমুখ।

সভায় ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ আগামী ২২-২৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৪৮ ঘণ্টার গণঅনশন ও গণসমাবেশ এবং ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ সফল করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিক শহীদুল আলমকে আটকে রিজভীর উদ্বেগ

নির্বাচন নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে : কফিল উদ্দিন

দুদিন পর উদযাপিত হবে জবির এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে বড় লাফ, ফের ইতিহাস

জবি শিক্ষার্থীদের বিশেষ বৃত্তি, যেভাবে করতে হবে আবেদন

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

শহিদুল আলমের আটকের প্রচারিত ছবির বিস্তারিত জানা গেল

ডেঙ্গু জ্বরে জবির সাবেক শিক্ষার্থী সানজিদার মৃত্যু

সার ডিলার নিয়োগ নীতিমালা পেছানোর দাবি

প্রতি বছর ১ ফুট হারে তলিয়ে যাচ্ছে যে শহর

১০

ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে মরিচ গুঁড়া মাখিয়ে দিলেন স্ত্রী

১১

ধর্ষণের অভিযোগ করার পর অভিযোগকারীকেই স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার

১২

আ.লীগে যোগ দেওয়া রফিকুল এবার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী

১৩

শহিদুলের ভিডিওবার্তা নিয়ে যে তথ্য দিল বাংলাফ্যাক্ট

১৪

মাঝ সমুদ্রে ভাসতে থাকা ২৬ জেলেকে উদ্ধার

১৫

কেন শুধু জাতীয় দলের হয়েই খেলতে চাইলেন রোনালদো?

১৬

যে শহরে দিনে ২ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ!

১৭

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে লালুর বক্তব্য ব্যক্তিগত : বিএনপি

১৮

নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া শাপলার ৭ নমুনা প্রকাশ এনসিপির

১৯

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময় 

২০
X