

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ পেয়েছেন দৈনিক কালবেলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শেখ হারুন। ‘ব্যান্ডউইথও আসছে চোরাই পথে!’ শিরোনামের প্রতিবেদনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে এ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে ‘নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ শেখ হারুনের হাতে তুলে দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগদের চেয়ারম্যান কায়জার আহমেদ চৌধুরী, নগদের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত প্রশাসক মোতাছিম বিল্লাহ, জুরি বোর্ডের প্রধান শামসুল হক জাহিদ, ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।
এ বছর মোট ২৭টি বিষয়ে সেরা রিপোর্টিং পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী সাংবাদিকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ ৫০ হাজার টাকা।
শেখ হারুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন তিনি। অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিম বিডি নিউজের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন শেখ হারুন। পরবর্তীতে তিনি বৈশাখী টেলিভিশন থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কালবেলায় যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি কালবেলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পাওয়া ‘ব্যান্ডউইথও আসছে চোরাই পথে!’ প্রতিবেদনটি ছিল প্রযুক্তি খাতের অনিয়ম নিয়ে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে ব্যান্ডউইথ আনছে একটি সংগঠিত চক্র, যার নেতৃত্বে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কয়েকটি আইটিসি ও আইআইজি অপারেটর। সরকারের অনুমতি ছাড়াই বিপুল ব্যান্ডউইথ সীমান্ত দিয়ে এনে বিক্রি করা হচ্ছিল আইআইজি ও আইএসপিদের কাছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) দুর্বল নজরদারির সুযোগে গড়ে ওঠে ওই চোরাচালান নেটওয়ার্ক।
কালবেলায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেটাকে আমলে নিয়ে তদন্তের পাশাপাশি চোরাইপথে আসা ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। বিটিআরসির চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া চিঠিতে দৈনিক কালবেলায় ‘ব্যান্ডউইথও আসছে চোরাই পথে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্র হিসেবে দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটির পেপার কাটিংও যুক্ত করা হয়।
তদন্তে গুরুতর অনিয়ম পাওয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। শাস্তির অংশ হিসেবে লেভেল-থ্রি ক্যারিয়ার এবং আর্থ কমিউনিকেশন নামে দুটি আইআইজি কোম্পানিকে ২২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে বেআইনি কাজে জড়িত থাকার কারণে কোম্পানি দুটির ব্যান্ডউইথ ক্যাপিংয়েরও সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি।
এবারের নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ পেয়েছেন ২৭ জন। এর মধ্যে দুটি ক্যাটাগরিতে চারজন যৌথভাবে পুরস্কার জিতেছেন। অন্যদের মধ্যে পুরস্কার পেয়েছেন- সালাহ উদ্দিন জসিম (জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম), সাজ্জাদুর রহমান (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), রফিকুল ইসলাম (দ্য ডেইলি সান), এমএ নোমান (দৈনিক আমার দেশ), জিয়াদুল ইসলাম (দৈনিক আমাদের সময়), মো. শাখাওয়াত প্রিন্স (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), মো. শরিফুল ইসলাম (দ্য ডেইলি স্টার), দীপন নন্দী (দ্য ডেইলি স্টার), হারুন আর রশিদ (শেখ হারুন, দৈনিক কালবেলা), মো. আবু সালেহ রনি (দৈনিক সমকাল), মো. রাহেনুর ইসলাম (সকালসন্ধ্যা ডটকম), মো. শওকত আলী (দৈনিক দেশ রূপান্তর), মো. জসীম উদ্দীন (ঢাকা পোস্ট ডটকম), এহসানুল হক জসীম (দ্য ডেইলি সান), মো. হেলিমুল আলম (দ্য ডেইলি স্টার), শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (দৈনিক কালেরকণ্ঠ), শাহ মো. রাশেদুর রহমান (ডিবিসি নিউজ), আবু জাহেদ মুহম্মদ সেলিম (মাছরাঙা টেলিভিশন), আলমগীর হোসেন (যমুনা টেলিভিশন), রাজিব ঘোষ (ডিবিসি নিউজ), মো. ইমদাদুল হক (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর), মো. ইউসুফ আলী (ডিবিসি নিউজ), সুশান্ত সিনহা (একাত্তর টেলিভিশন), শাহনাজ শারমীন (একাত্তর টেলিভিশন), মেহ্দী আজাদ মাসুম (বৈশাখী টেলিভিশন), মৌসুমী ইসলাম (দ্য ডেইলি সান) এবং হাসান আরিফ (দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ)।
মন্তব্য করুন