বৃষ্টির হওয়ার একদিন পরেও ডুবে ছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। এই জলবদ্ধতার বিষয়ে নিজেদের কোনো দায় না নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সেদিন টানা ৬ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তাই জলাবদ্ধতা হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়।
তিনি বলেন, খালগুলোকে আমরা ভরাট করে ফেলছি, দখল করছি। এ ছাড়া যেখানে সেখানে পলিথিন, বোতল, আবর্জনা ফেলছি। যেগুলো গিয়ে ড্রেনে পরে পানি নামায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পানিপ্রবাহ নষ্ট হয়ে, যেতে না পরে জলাবদ্ধতা, পানি নেনে যেতে সময় লাগছে। পরে পানি নামছে, সময়তো দিতে হবে।
আজ রোববার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এইদিন আগামীর অনুপ্রেরণা শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আর্ট ক্যাম্পেইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় শেওড়াপাড়া, মধুবাগ, খেজুরবাগান, সংসদ ভবনের পাশের রাস্তা, নেভির সামনের রাস্তা ডুবে যেত। এখন কিন্তু সেই পরিস্থিতি নেই। জলাবদ্ধতা হয়, আবার পানি নেমেও যায়। ঢাকা শহরের অলিগলি ২০ ফুটের কম হলে আমরা রাস্তা জন্য বরাদ্ধ দিব না। এটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ ২০ ফিটের কম রাস্তা হলে সেখানে ড্রেন করার জায়গা থাকে না। এখনও অনেক রাস্তা আছে যেগুলো ২০ ফিটের কম রাস্তা। সেগুলোতেই মূলত জলাবদ্ধতার সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন জায়গায় বোতল, পলিথিন, নানা আবর্জনা আমরা ইচ্ছেমতো যেখানে সেখানে ফেলছি। সেগুলো গিয়ে ড্রেনের মধ্যে ঢুকছে, সেগুলোই পানি নামতে সমস্যা করছে। তাই জলবদ্ধতা কমে যেতে বা পানি সরে যেতে কিছুটা সময় লাগছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১০টি র্যাপিড অ্যাকশন টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে এবং এই জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। আমরা কিন্তু বসে নাই, আমরা, কাউন্সিলররাসহ সংশ্লিষ্ট মিলে সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের এখন চ্যালেঞ্জ হল রাস্তা গুলো ২০ ফিট করতে হবে। আর অলিগলিতে যেসব যেসব ড্রেন আছে সেগুলোকে আমরা বড় করার কাজ শুরু করেছি, যাতে করে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে। দক্ষিণখান এবং আজমপুরে আমরা এই কাজগুলো ইতোমধ্যে শুরু করেছি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়ার দিকে যে রাস্তা এটাতে আগে জলাবদ্ধতা হলে দুই তিন দিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকত। আমরা কিছু কাজ করার ফলে এখন কিন্তু সেখানে ওইরকম জলাবদ্ধ থাকে না। সব ড্রেনের ডায়মিটার কিন্তু এক না, অলিগলিতে একটু ছোট লাইন, সেখান থেকে পানি আসবে বড় লাইনে, এরপর সেখান থেকে পানি খালে নামবে। সেহেতু পানি সরে যেতে কিছুটা সময় দিতে হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, খালগুলোকে আমরা ভরাট করে ফেলছি দখল করছি। ড্রেনের বিভিন্ন কিছু ফেলে, পানি নামতে বাধা সৃষ্টি করছি। সব মিলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। কল্যাণপুরে যে ১৩০ একর জায়গার উপরে ওয়াটার রিটেনশন পন্ড ছিল যেখানে বৃষ্টির পানি গিয়ে জমা হতো। সেখানে ইতোমধ্যে একটি সরকারি সংস্থা ৪০ বিঘা জমি বালি দিয়ে ভরাট করেছে। তাহলে রাজধানীর যে জলাবদ্ধতা, যে পানি জমে থাকে সেই পানিগুলো কোথায় গিয়ে নামবে? আমাদের সবার মনে রাখতে হবে আমরা যেন পরিবেশটাকে নষ্ট না করি। পরিবেশকে নষ্ট করলে পরিবেশ নিজেই একসময় প্রতিশোধ নিবে। জলাবদ্ধতাসহ এমন নানা সমস্যার সম্মুখীন আমাদের হতে হবে।
মন্তব্য করুন