কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩, ০৭:৩৩ পিএম
আপডেট : ২০ জুন ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার : মির্জা ফখরুল

মঙ্গলবার গুলশানে একটি হোটেলে বিএনপির মিডিয়া সেলের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা
মঙ্গলবার গুলশানে একটি হোটেলে বিএনপির মিডিয়া সেলের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জোর করে ক্ষমতা দখলের পর থেকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গায় প্রথম আঘাত করেছে। সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।’

মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক চেতনা বা গণতান্ত্রিক সমাজ। যেখানে মুক্ত বা স্বাধীন গণমাধ্যম থাকবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জোর করে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেই জায়গায় প্রথম আঘাত করেছে। সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার অনেকটি বন্ধ করা হয়েছে। বিশেষ করে বিরোধীমতের গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারী সংবাদকর্মী তাদেরও অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মিডিয়া সেল দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত প্রচারের ব্যবস্থা করছে। আমি মনে করি, বর্তমানে দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের যে অবস্থা তার প্রেক্ষিতে মিডিয়া সেল অনেকদূর এগিয়েছে।’

বিএনপির মিডিয়া সেলের ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা বরকতউল্লাহ বুলু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আহমেদ আযম খান, আবুল খায়ের ভুইয়া, জয়নুল আবদীন ফারুক, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, আমান উল্লাহ আমান, মো. আবদুস সালাম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মীর সরফত আলী সপু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, কাদের গণি চৌধুরী, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, শাম্মি আখতার, আলী মাহমুদ, শায়রুল কবির খান, অন্যদলের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির কারি আবু তাহের, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনৈতিক ও কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, ‘যারা গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত তারা সত্য কথা লেখা ও বলার জন্য কতটা নিগৃহীত হচ্ছেন। কিছুদিন আগেই জামালপুরে একজন সংবাদকর্মীকে শাসকগোষ্ঠীর লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ধরনের খবর মিডিয়ায় খুব প্রচার হচ্ছে না। কিছুদিন আগে বাসায় খুনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করে ওই বাসার কেয়ারটেকারকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দশ দিন নির্যাতনের পর মেরে ফেলা হয়েছে। এটাও কিন্তু গণমাধ্যমে খুব বেশি প্রকাশিত হয়নি। এটা একটা বড় প্রমাণ হলো- পুলিশ কাস্টডিতে কীভাবে নির্যাতন করা হয়! এ ধরনের অনেক ঘটনা আছে। কদিন আগে নওগাঁয় এক মহিলা সুলতানাকে র্যাব তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মৃত্যু হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার কত বছর হয়ে গেল। অথচ তার চার্জশিট দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এসবের প্রধান সংকট হলো দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য। যা শাসকগোষ্ঠী ১৯৭২-৭৫ সালেও চেষ্টা করেছে। ১০ বছরে ভিন্ন রুপে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেটি কার্যকর হবে না। সেজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন। এটাই আমাদের বক্তব্য। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে নির্বাসিত আছেন। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেখানে ভিন্নমত প্রকাশের কোনো উপায় নেই। এই প্রেক্ষিতে আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেছি। দশ দফা দাবিতে কর্মসূচি চলছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা ঘোষণা করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সমমনা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন করছি। আমরা বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে নয়, দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে মিডিয়া সেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের প্রকৃত খবর দেখা ও শোনার যে অভাব রয়েছে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে মিডিয়া সেল সেটি পূরণ করবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের

আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়াত মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে ঢাকায় পরামর্শ সভা

চিঠি দিবস / চিঠির কালো অক্ষরগুলোয় কী মায়া, মমতা, মোহ, জাদু!

নির্বাচন নিয়ে সরকার-ইসির আন্তরিকতা যথেষ্ট নয় : গয়েশ্বর

৩১ দফার বার্তা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে হবে : সেলিমা রহমান

এসএ২০ নিলামে সাকিব–মোস্তাফিজসহ ১৪ ক্রিকেটার

প্রবাসী বাংলাদেশির মেয়েকে হত্যায় ইতালিতে বিক্ষোভ

সংঘর্ষের ৪৪ ঘণ্টা পর মামলা করতে থানায় চবি প্রশাসন

চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হেসে খেলে ডাচদের হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল টাইগাররা

১০

‘জনগণের ভালোবাসা ও আস্থার ভিত্তিতে বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে’

১১

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এনসিটিবির কড়া সতর্কতা

১২

উমামা ফাতিমার সংবাদ সম্মেলন বয়কট মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের

১৩

মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে ১ কোটি টাকা অনুদান দিল জামায়াত

১৪

চবি ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি, সময় বাড়ল আরও একদিন

১৫

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা ফ্রি হবে : খসরু

১৬

ডাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

১৭

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা পরিষ্কার করা ভালো নাকি খারাপ, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

১৮

নৌ-পুলিশের অচল স্পিডবোটের জন্য বরাদ্দ ২০০ লিটার তেল!

১৯

‘আমি নাকি গে!’ গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অক্ষয় কুমার

২০
X