সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, উই উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের নারী সমাজকে জাগ্রত করেছে। রক্ষণশীলতা ও মৌলবাদকে রুখে দিয়ে নারীদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ করে দিয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই অর্থনীতি গড়তে দেশে বেশি সংখ্যক উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই। উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর।
সারাদেশ থেকে আসা ই-কমার্স খাতের সঙ্গে যুক্ত নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চলছে ‘উইমেন ই-কমার্স এন্ট্রারপ্রেনারশিপ সামিট (উই সামিট) ২০২৩’। আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এ মন্তব্য করেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সরকার নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। নারীরা যখন উদ্যোক্তা হন, তখন একটি পুরো পরিবার সচ্ছল হয়ে যায়। উই সেই কাজটিই করছে নীরবে। অর্থাৎ উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ সংগঠন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই)। বিপুলসংখ্যক নারীদের মধ্যে উই পাঁচ থেকে ছয় লাখ নারীকে একত্র করেছে। যদি এ সংখ্যা ছয় থেকে আট গুণ বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে সময় লাগবে না।
উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের (উই) প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, উই মানে আমাদের সামিট। বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে সফল প্ল্যাটফর্ম। ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমাণে নারীদের আত্মকর্মসংস্থান ও আত্মমর্যাদা সৃষ্টিতে ই-কমার্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখন ১৪ লাখ সদস্যের পরিবারে পরিণত হয়েছে। করোনাকালে ই-কমার্স ছিল আমাদের অর্থনীতির লাইফলাইন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। ‘শি পাওয়ার’ প্রজেক্টের মাধ্যমে ২১টি জেলায় ১০ হাজার ৫০০ নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। বাকি ৪৩টি জেলায় ‘হাব পাওয়ার’ প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও ২৫ হাজার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা কর্মকর্তা গায়লে মার্টিন বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের বিশ্বব্যাপী তাদের পণ্য পৌঁছে দিতে কাজ করছে উই। বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সহজলভ্য করতে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এ কাজে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজের নিয়ন্ত্রক (যুগ্ম সচিব) এ টি এম জিয়াউল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন বিশ্বব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন, দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার খন্দকার তাসফিন আলম, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ব্যারিস্টার তাসনিম মোস্তফা ও উইর উপদেষ্টা কবির সাকিব। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরুল্লাহ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শান্তা জাহান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর নির্মিত ‘মুজিব আমার প্রেরণা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাছাড়া, উইর কার্যক্রম এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আগামীকাল শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দুটি কর্মশালা ও একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন খাতে অবদান রাখা ১০ নারী ও ১০ নারী উদ্যোক্তাকে ‘জয়ী’ সম্মাননা দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন