বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারায় ভোটের রাজনীতি ও অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। তাই নির্বাচনে কারচুপির প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ব্রাসেলসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশ্বাস দলটি আবারও নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ বিগত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এনে আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সতর্ক করেছে।
এ বিষয়টি নিয়ে পলিটিকোর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবেন কি না? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপির প্রশ্নই আসে না।’
এ সময় তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে দীর্ঘ কয়েক বছরের সামরিক শাসনের পর মূলধারার রাজনীতিতে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে তার দলই সংগ্রাম করেছে।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী গত ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলসে যান।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। ২৫ অক্টোবর সকালে, তিনি ইসির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ইউরোপীয় কমিশন ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি অনুদান চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইসির মধ্যে একটি ১২ মিলিয়ন ইউরোর অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ ছাড়া এই সফরে বাংলাদেশ সরকার এবং ইসি বাংলাদেশের সামাজিক খাতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর পাঁচটি ভিন্ন অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা ২৫ অক্টোবর গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন এবং বক্তৃতা করেন। বিকেলে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ার্নার হোয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ইসি কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট জেনেজ লেনারসিক এবং ইসি কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ জুটা উরপিলাইনেনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সন্ধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে উরসুলা ভন ডের লেয়েনের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন।
২৬ অক্টোবর সকালে, তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রুর সাথে এবং লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সাথে দুটি পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। একই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের সমাপনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা পরে বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। টিভি চ্যানেল ‘ইউরো নিউজ’ এবং ‘পলিটিকো’ যথাক্রমে ২৫ ও ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেয়।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগদান শেষে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্তব্য করুন