বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিদারুণভাবে উদ্বিগ্ন। এমন বাস্তবতায় রাজনৈতিক সহিংসতার সুযোগ নিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে কোনো ধরণের সহিংসতা চালাতে না পারে এজন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
আজ বুধবার (১ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐক্যমোর্চার আহ্বায়ক রাণা দাশগুপ্ত।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের দেয়া নির্বাচনী ইশতেহারে সাতদফা সংখ্যালঘুদের জন্য সাতদফা প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। আশ্বাসে আশ্বাসে কেটেছে পাঁচ বছর। অথচ আমরা দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করে আসছি। এরি ধারাবাহিকতায় দাবি আদায়ে ডাকা মহাসমাবেশের তারিখ দুবার পেছানো হয়েছে।
বিদ্যমান জাতীয় রাজনীতির সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও এর নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার ৪ নভেম্বরে আয়োজিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের তারিখ ১৭ নভেম্বর পুনঃনির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
লিখিত বক্তব্যে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, গত ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী গণঅনশন ও গণঅবস্থান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলাকালীন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন অক্টোবর মাসে গঠনের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যা আজ পর্যন্ত ঘোষিত না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক।
তিনি জাতীয় সংসদের চলতি শেষ অধিবেশনে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন বিল উত্থাপন ও তা পাশ করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন করা হলেও দেড় লাখ আবেদনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৫ ভাগ নিষ্পত্তি হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অসহযোগিতার কারণে মাত্র ১৫ ভাগ মানুষ সম্পত্তি ফেরত পাচ্ছেন। অথচ রায়ের একমাসের মধ্যে সম্পত্তি ফেরত দেওয়া আইনে আছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক। বক্তব্য রাখেন- ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, সাংবাদিক মনোজ রায়, হিন্দু মহাজোট (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক ডা. এম কে রায়, উত্তম কুমার চক্রবর্তী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রবীন্দ্র নাথ বসু, মিহির রঞ্জন হাওলাদার, রতন পাল প্রমুখ।
মন্তব্য করুন