আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের উভয় বিভাগ যথেষ্ট কাজ করেছে। তাতে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, বহুদিন ধরে মামলা জট নিরসনের বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় গেল ১০-১৫ বছর আমাদের এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়েছে। তবে আমরা মামলাজট নিরসনে সঠিক পথে এগোচ্ছি।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সুশাসন নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা রাখবে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অঙ্গীকার দেশবাসীর কাছে করেছেন এবং আমাদের প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে। প্রথম কথা হলো, যখন কোভিড মহামারি ছিল, তখন বিশ্বজুড়ে একটা স্থবিরতা চলে এসেছিল, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যেও বিচারিক ব্যবস্থার মধ্যে একটা স্থবিরতা চলে এসেছিল। কিন্তু কোভিডকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভার্চ্যুয়াল আদালত স্থাপন করে বিচার ত্বরান্বিত করা হয়েছে। কারাগারেও যাতে জটিলতা তৈরি না হয়, সেই অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে। অনেক মামলার সুরাহা করা হয়েছে।
সরকার অনেক আইন করেছে, বিশেষ করে সাক্ষ্য আইন। এই আইনে যে সংশোধন করা হয়েছে, নারীদের ইজ্জতের ব্যাপার ছিল সেখানে। এটি একটি বিরাট পদক্ষেপ। এভাবে সরকার অনেক আইন করেছে। তারপর সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন করা হয়েছে, তাতে করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের মধ্যে যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের ফিরিয়ে আনতে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেটার একটি সফলতা আনার জন্য কাজ করা হবে। সদ্যগত জাতীয় নির্বাচনের সময়ে সহিংসতা প্রায় ছিলই না। কোনো দেশের নির্বাচনের সময় স্কারমিসেচস (আন্তঃকোন্দল) যেটা হয়, ততটুকুই হয়েছে। এমন কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি, যেটাকে অনেক সহিংসতা বলা যায়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক কারণে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। তাদের মামলা এখনো চলমান। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় এসে সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর যে নির্যাতন-অত্যাচার করেছিল, ২০১৩ সালে যে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, সেই মামলাগুলো ম্যাচিউরড হয়ে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
সভা শেষে তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং উভয় বিভাগের অধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, মানবাধিকার কমিশন, বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন।
এ সময় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের দায়িত্ব পালনকারী) মো. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন