বিশ্বের উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও চালু হয়েছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের কারণে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় একটা পরিবর্তন এসেছে। মেট্রোরেল বর্তমানে উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে মেট্রোরেল চলাচল করছে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। আর উত্তরা-আগারগাঁও-উত্তরা রুটে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলছে ট্রেন। তবে আগামীকাল শনিবার (২০ জানুয়ারি) উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরোদমে চালু হচ্ছে মেট্রোরেল সেবা।
মেট্রোরেল পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল ৭টা ১০ মিনিট এবং সকাল ৭টা ২০ মিনিটে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন থেকে দুটি ট্রেন মতিঝিলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। ওই দুটি ট্রেনে সকালে ওঠার সময় অবশ্যই এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করতে হবে। অপরদিকে মতিঝিল থেকে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ট্রেন চলবে।
সবশেষ রাত ৮টা ১০, ২০, ৩০ ও ৪০ মিনিটে চারটি মেট্রো ট্রেন মতিঝিল থেকে ছেড়ে উত্তরা উত্তর স্টেশন পর্যন্ত আসবে। এই চারটি ট্রেনেও শুধু এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করতে হবে। তবে কেউ যদি ৭টা ৪৫ মিনিটের আগে টিকেট কিনে থাকেন তিনিও ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাত ৭টা ৪৫ থেকে সকল ধরনের টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে।
যেভাবে করবেন এমআরটি পাস
ডিএমটিসিএল-এর ওয়েবসাইট (dmtcl.gov.bd) থেকে বা মেট্রোরেল স্টেশন থেকে ফরম সংগ্রহ করতে হবে। সেটি পূরণ করে মেট্রোরেলের টিকিট কাউন্টারে জমা দিলেই পাওয়া যাবে এমআরটি পাস কার্ড।
নিবন্ধন করতে নিজের নাম, মাতা-পিতার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল আইডি লাগবে। সকল স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ১৫ থেকে রাত ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এমআরটি পাস কেনা যাবে।
এমআরটি পাসের খরচ কত?
এমআরটি কার্ড নিতে হলে খরচ হবে ৫০০ টাকা। এরমধ্যে ২০০ টাকা কার্ডের জামানত হিসেবে থাকবে, যা কার্ড জমা দিলেই ফেরত পাওয়া যাবে। বাকি ৩০০ টাকা ব্যালেন্স থাকবে যা দিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করা যাবে।
যে কোনো স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে কার্ডে টাকা রিচার্জ করা যাবে। টিকিট বিক্রির মেশিনেই টপ আপ অপশন রয়েছে। যেখান থেকে সহজেই টাকা দিয়ে রিচার্জ করে নেওয়া যাবে।
এমআরটি ও র্যাপিড পাসের পার্থক্য কী
এমআরটি পাস:
এমআরটি পাস হলো- নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বা কম দূরত্বের যোগাযোগ। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক একটি সংযোগবিহীন স্মার্ট আইসি কার্ড। এই কার্ড দিয়ে ঝামেলাবিহীনভাবে অতি সহজে মেট্রোরেলের (ভবিষ্যতে বাস, লঞ্চ, মেট্রোরেল কর্তৃক পরিচালিত শপিংমল ইত্যাদির বিল) ভাড়া পরিশোধ করা যায়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এমআরটি পাস ব্যবহারকারীরা অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন পরিবহন ব্যবহারের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
র্যাপিড পাস:
অপরদিকে র্যাপিড পাসও নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বা কম দূরত্বের যোগাযোগের সর্বাধুনিক স্মার্ট কার্ড। এটি জাপানের সনি কোম্পানির তৈরি। তবে এমআরটি পাস কিংবা র্যাপিড পাসে খুব একটা পার্থক্য নেই, প্রায় একই সুবিধা পাওয়া যাবে। একজন ব্যক্তি চাইলে একাধিক কার্ড ইস্যু করতে পারবে তবে একটি পরিচয়পত্রের বিপরীতে একটি কার্ড নেওয়াই ভালো।
বাংলাদেশের গণপরিবহনের সমন্বিত ই-টিকেটিং ব্যবস্থা ও ভাড়া আদায়ে সর্বাধুনিক স্মার্ট কার্ড ‘র্যাপিড পাস’ সুবিধা চালু করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। দেশের বিভিন্ন গণপরিবহন যেমন- মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট, বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিসি’র নৌ-যান সার্ভিস, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বাস সার্ভিসে স্বাচ্ছন্দ্যে ও নিরবচ্ছিন্নভাবে যাতায়াতে ঝামেলাহীন পেমেন্ট সুবিধা পেতেই র্যাপিড পাস সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
র্যাপিড পাসটি ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের নির্বাচিত শাখায়, উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন ও আগারগাঁওয়ের এমআরটি-৬ বুথ থেকে পাওয়া যাবে।
যে কোনো স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে কার্ডে টাকা রিচার্জ করা যাবে। টিকিট বিক্রির মেশিনেই টপআপ অপশন রয়েছে। যেখান থেকে সহজেই টাকা দিয়ে রিচার্জ করে নেওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন