জামালপুরের বকশীগঞ্জে গত কয়েকদিনে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীতে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। ফলে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষজন।
এ ছাড়াও মুন্দিপাড়া ব্রিজের মাথা থেকে মাটি সরে যাওয়ায় দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ব্রিজটি। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বেড়েছে নদ-নদীর পানি। তীব্র স্রোতের কারণে বেড়েছে ভাঙন। প্রতিদিন ভাঙছে বসতভিটা, ফসলি জমি। নিলক্ষিয়া, মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে।
মেরুরচর ইউনিয়নের নতুন মুন্দিপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ মিয়া, সুন্দর আলী, জুয়েল মিয়া, ঘুঘরাকান্দি এলাকার ফকির আলী, গামা শেখ, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইড়মারী এলাকার হাসর আলীসহ অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও ঘুঘরাকান্দি বাজার মসজিদটি ভেঙে গেছে। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জুয়েল মিয়া বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবার তীব্র ভাঙনে বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অতিদরিদ্র কৃষক। তাদের অনেকের নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য নেই।
ঘুঘরাকান্দি এলাকার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ফকির আলী, গামা শেখ, হাসেম আলী, মকবুল শেখ বলেন, তাদের সবাই কমবেশি ভাঙনের শিকার। ভাঙনে সহায়সম্বল বলতে যা ছিল, তার সব শেষ হয়ে গেছে। ফসলি জমিও নদীতে চলে যাচ্ছে। বারবার আবেদন করা হলেও ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২২ মে) নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বকশীগঞ্জের ইউএনও মাসুদ রানা কালবেলাকে জানান, মুন্দিপাড়া ব্রিজটির অ্যাপ্রোচ ধসে যাওয়ার খবর পেয়েই সংস্কারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চলাচলের জন্য আরেকটি সাঁকোর ব্যবস্থা করা হবে। নদীভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন