সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা। বৃষ্টিপাত থামার কয়েক ঘণ্টা পরও সড়কে জমে ছিল পানি। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ১২টার পর থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এরপর কোথাও ভারি আবার কোথাও মাঝারি থেকে হালকা, থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে থাকে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গার প্রধান আবহাওয়া কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম শহরে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। যার ফলে ঝড়ো বাতাসের আশঙ্কা আছে। এ জন্য তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
এ দিন বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে জলজটের সৃষ্টি হয়। কোথাও হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় সড়ক। আবার নিচু এলাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়ির নিচতলায়ও পানি ঢুকে পড়ে। নগরীর কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, শোলকবহর, কাপাসগোলা, জিইসি, দুই নম্বর গেট, আগ্রাবাদ, হালিশহর, চকবাজার, বাকলিয়া, বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এসব এলাকায় অফিস থেকে বাসাগামী লোকজন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফেরত শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছেন।
নগরীর জিইসি এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুর রহমান বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকায় পানি উঠে যায়। আর আমাদের ভোগান্তির অন্ত থাকে না। এ সমস্যার কোনো সমাধান হবে কি না, জানা নেই।
কাতালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ফাহমিদা বেগম বলেন, অফিস থেকে ফিরতে ভয় লাগে। রাস্তায় কোথায় ড্রেন তা বোঝা যায় না। এবার জলাবদ্ধতা হবে না বলে শুনে আসছি; কিন্তু এখন তো দেখছি বর্ষা আসার আগেই পানি উঠে যাচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনে ১৬ হাজার ৭৭১ কোটি টাকার চারটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলোয় খাল পুনঃখনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন, রেগুলেটর স্থাপন এবং সড়ক নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় থাকা খাল-নালা দীর্ঘদিন ধরে উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে কোনো সময় নালায় তলিয়ে, আবার কোনো সময় জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে লোকজন মারা যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম কালবেলাকে বলেন, আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ ২৬ সালের জুন পর্যন্ত আছে। এবার আমরা টার্গেট করেছি, এ বছর গতবারের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ ইম্প্রুভমেন্ট করব। ৩৬টা খালের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ থেকে ২৪টা খালের কাজ শেষ হয়েছে। সব খালের কাজ শেষ না হলে ফল দৃশ্যমান হবে না। তবে কিছুটা ইম্প্রুভমেন্ট অবশ্যই দেখা যাবে। গতবার ১০০ জায়গায় পানি উঠলে এবার ৫০ জায়গায় উঠবে। আর এ পানি গতবারের তুলনায় অর্ধেক সময় আগে সরে যাবে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও টার্গেট দিয়েছেন যেন গতবারের তুলনায় অর্ধেক ইম্প্রুভ করতে পারি।
মন্তব্য করুন