প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন লাগা ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় ৪৬ জন লোক মারা গেছেন এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছি, সেটা কিন্তু আর মানে না।
শুক্রবার (১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বেইলি রোডে যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে কোনো ফায়ার এক্সিট নেই। এসব ভবন নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ার এবং মালিকদের গাফিলতি থাকে। এসব ক্ষেত্রে সচেতনতা খুব প্রয়োজন। বর্তমানে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, জীবনব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে ইনস্যুরেন্স কিন্তু নিরাপত্তা দিতে পারে।
তিনি বলেন, অনেক সময় বীমা নিয়ে অনেকে নানা ধরনের ব্যবসাও করে। ইচ্ছাকৃতভাবেও আগুন দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের সব অগ্রযাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেয়। পরে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করি। বর্তমানে বীমা শিল্প অনেক এগিয়ে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বীমা দাবিগুলো যেন মানুষ সহজে পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। যারা দুই নাম্বারি করে তাদের কথা বলছি না। উন্নয়নশীলের যাত্রা আমরা ২০২৬ সাল থেকে শুরু করব।
অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ বীমা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার তুলে নেন ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য আলহাজ মোরশেদ আলম।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভবনের ভেতর থেকে ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, একটিমাত্র সিঁড়ি থাকা অগ্নিনিরাপত্তা প্রোটোকলের একটি বড় ত্রুটি। ভবনটিতে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ছিল এবং সিঁড়ির পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে।
এদিকে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শেখ হাসিনা তার শোকবার্তায় নিহতদের মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি বেঁচে যাওয়াদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৮০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
মন্তব্য করুন