গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৮৩টি। এসব ঘটনায় নিহত ৫৪৪ ও আহত হয়েছে ৮৬৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৭৯, শিশু ৮২।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২০৬ জন, যা মোট নিহতের ৩৭.৮৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩২.০৭ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০.০৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৪ জন, অর্থাৎ ১৩.৬০ শতাংশ।
এই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছেন। ৩৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত এবং ৬৬ জন আহত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ২০৬ জন (৩৭.৮৬%), বাস যাত্রী ২৩ জন (৪.২২%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৪১ জন (৭.৫৩%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ১৬ জন (২.৯৪%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (অটোরিকশা-অটোভ্যান-ইজিবাইক-মিশুক) ১১১ জন (২০.৪০%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি- পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি-ইটভাঙ্গা মেশিন গাড়ি) ২৪ জন (৪.৪১%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান আরোহী ১৪ জন (২.৫৭%) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৭৩টি (২৯.৬৭%) জাতীয় মহাসড়কে, ২৩৪টি (৪০.১৩%) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৩টি (১৫.৯৫%) গ্রামীণ সড়কে, ৭২টি (১২.৩৪%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (১.৮৮%) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন
দুর্ঘটনাসমূহের ৯৭টি (১৬.৬৩%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৭৮টি (৪৭.৬৮%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১৩টি (১৯.৩৮%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৮১টি (১৩.৮৯%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৪টি (২.৪০%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনসমূহ
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-পুলিশভ্যন-বিদ্যুতের খুঁটিবাহী ট্রাক-তেলবাহী ট্যাঙ্কার-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক-ডাম্পার-এক্সকেভেটর-চাষের ট্রাক্টর ৩০.৯৪%, যাত্রীবাহী বাস ১২%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স ৫.৪২%, মোটরসাইকেল ২৪%, থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা-অটোভ্যান-ইজিবাইক-সিএনজি-মিশুক-লেগুনা) ১৬.২৮%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-টমটম-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি-স্টীয়ারিং গাড়ি-ইটভাঙ্গা গাড়ি) ৬.৪৬%, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২.৬৫% এবং অজ্ঞাত গাড়ি ২.১৯%।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৮৬৬টি। (বাস ১০৪, ট্রাক ১৪৮,কাভার্ডভ্যান ২২, পিকআপ ৩১, ট্রাক্টর ২০, ট্রলি ১৮, লরি ৬, ড্রামট্রাক ১২, পুলিশভ্যান ১, ডাম্পার ৩, বিদ্যুতের খুঁটিবাহী ট্রাক ১, তেলবাহী ট্যাঙ্কার ২, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ২, চাষের ট্রাক্টর ১, এক্সকেভেটর ১, মাইক্রোবাস ১৭, প্রাইভেটকার ২৬, অ্যাম্বুলেন্স ৪, মোটরসাইকেল ২০৮, থ্রি-হুইলার ১৪১ (অটোরিকশা-অটোভ্যান-ইজিবাইক-সিএনজি-মিশুক-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৫৬ (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-টমটম-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি-স্টিয়ারিং গাড়ি-ইটভাঙ্গা গাড়ি) বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২৩ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৯টি।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫.৪৩%, প্রাণহানি ২২.০৫%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.৮০%, প্রাণহানি ১৫.৪৪%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২১.৬১%, প্রাণহানি ২০.৯৫%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১২%, প্রাণহানি ১০.৮৪%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৪.৬৩%, প্রাণহানি ৩.৩০%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৬%, প্রাণহানি ৪.৭৭%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.৬৯%, প্রাণহানি ১১.৩৯% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৮০%, প্রাণহানি ১১.২১% ঘটেছে।
চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২৬টি দুর্ঘটনা এবং ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম।
মন্তব্য করুন