কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন : মার্কিন থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক

যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বলছে- শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বলছে- শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বলেছে, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মার্কিন কর্মকর্তাদের স্বীকৃতি ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি লাভের পর দেশ পরিচালনায় যাত্রা মসৃণ হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয়ের পর কিছু সমালোচক সতর্ক করেছিলেন, বাংলাদেশ কার্যকর একদলীয় শাসনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয়ী হয়েছে এবং এর অনুগত স্বতন্ত্ররা আরও ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারা যুক্তি দিয়েছিল সংসদে কোনো অর্থবহ বিরোধী দল নেই।

গত ৮ এপ্রিল ‘আটলান্টিক কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে’ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ভারতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ী লিখেছেন, মার্কিন সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি লাভের সঙ্গে সঙ্গে ‘হাসিনার সরকার পরিচালনার জাহাজটি এখন মসৃণ সমুদ্রে যাত্রা করছে।’

লাহিড়ী বাংলাদেশের ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে একজন স্বাধীন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার এবং পঞ্চম মেয়াদে সরকার গঠন করে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন নারী সরকার প্রধান হিসেবে আর্বিভূত হন।

লাহিড়ী উল্লেখ করেছেন, ‘জানুয়ারিতে তার দলের জয় এই অঞ্চলের প্রায় সব মহলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে। শেখ হাসিনা একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি চীন ও ভারত উভয়েই তার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন দিয়েছিল। আঞ্চলিক শক্তি, মতাদর্শগত এবং রাজনৈতিক ঝোঁক নির্বিশেষে তার প্রশাসনকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে এসেছে।’

লাহিড়ী লিখেছেন, যাই হোক আওয়ামী লীগ সরকারের বেশিরভাগ দৃষ্টি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। এটি বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র’ প্রচারের জন্য কতটা সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করেছে তা দেখে। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছিল, নির্বাচনগুলো অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না। মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচন বর্জন করলেও সব বিরোধী দল তা অনুসরণ করেনি। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং সেইসঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৯শ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

অফিসিয়াল ভোটার (৪১.৮ শতাংশ) গত নির্বাচনের তুলনায় কম ছিল কিন্তু অভূতপূর্ব কম নয়। কেউ কেউ এই কম ভোটারকে একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখেন যে বিরোধীদের বয়কট জনগণের মনোভাব প্রতিফলিত করে।

তিনি বলেন, বিএনপির বয়কট কিছু ভোটারদের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়েছে তবে এটি অগত্যা জনগণের ভোট প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত বহন করে না।

ভোটের দৌড়ে, বিএনপির নির্বাচন বিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় পরিণত হয়। শতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির অনুগতদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোটের আগের দিন দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল-অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। অগ্নিসংযোগকারীরা ভোটকেন্দ্র এবং একটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং চারজন নিহত হয়। আতঙ্কের এই বিরাজমান পরিস্থিতিতে কিছু ভোটারকে নির্বাচনের দিন বাড়িতেই অবস্থান করতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয়ের পর কিছু সমালোচক সতর্ক করেছেন, বাংলাদেশ কার্যকরভাবে একদলীয় শাসনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয়ী হয়েছে এবং এর অনুগত স্বতন্ত্ররা আরও ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারা যুক্তি দিয়েছিল, সংসদে কোনো অর্থবহ বিরোধী দল নেই।

তিনি বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকে ইঙ্গিত করে উল্লেখ করেছেন, দলের সিনিয়র ব্যক্তিদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিয়ে, আওয়ামী লীগ অবশ্যই সম্ভাব্য অন্তর্দলীয় বিরোধের ঝুঁকি নিয়েছিল। তবুও, এটি ভোটারদের প্রকৃত নির্বাচনী বিকল্প প্রদান এবং সংসদে কণ্ঠস্বরের বৈচিত্র্যকে প্রসারিত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি অপ্রতিরোধ্য সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা একটি দল একদলীয় রাষ্ট্রের সমতুল্য নয়। বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্র না বানিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই রকমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।

একইভাবে ভারত ও জাপান বহুদলীয় গণতন্ত্রের কাছে না হারিয়ে একদলীয় আধিপত্যের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। প্রধান প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগ এই অতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদের আয়োজন করেছিল না কি বিএনপির নির্বাচন বয়কটের কারণে এটি অনিবার্য পরিণতি ছিল।

লাহিড়ী বলেন, পর্যবেক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল কেন বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো নজির নেই বলে বিএনপির দাবিকে অভিহিত করা হলেও, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবির এখনো ভিত্তি নেই। বয়কট শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সাহায্য করেছিল। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট অনুসরণ করার চেয়ে তত্ত্বাবধায়ক শাসনের মধ্যে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরির বিষয়ে উচ্চতর আশা করেছিল। এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে নারীর জরায়ু কাটার অভিযোগ

রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পর্শে একজনের মৃত্যু

বঙ্গবন্ধু মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন

পাবিপ্রবিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন

বাজারে গিগাবাইটের এআই পরিচালিত ইন্টেল ১৪ জেনারেশন ল্যাপটপ

চিকিৎসা শেষে পথেই প্রাণ গেল ৪ জনের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাকচাপায় কলেজছাত্র নিহত

উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

এআইইউবিতে সিএস ফেস্ট

৩ সাংবাদিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা

১০

উচ্চ শিক্ষায় ফিলিস্তিনের নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে আইইউবিএটি

১১

দেশ এখন ভয়াবহ সংকটে রয়েছে : গণঅধিকার পরিষদ

১২

মুক্তি পেতে যাচ্ছেন মামুনুল হক 

১৩

স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের মুখোশ উন্মোচনের দাবি পরশের

১৪

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব

১৫

কক্সবাজারে ডাকাতদলের সঙ্গে র‍্যাবের গোলাগুলিতে নিহত ১

১৬

বনের জায়গায় পাকা ঘর, কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য

১৭

১৮ মে পিরোজপুরে যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন

১৮

ভারতের যেসব রাজ্যে হতে পারে বজ্রঝড়সহ ভারী বৃষ্টি

১৯

মেরিনার্সের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান চপল, ভাইস চেয়ারম্যান শোয়েব

২০
*/ ?>
X