শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাঁচ দফায় সংসদ নির্বাচন চায় টিআইবি

রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে পাঁচ দফায় জাতীয় নির্বাচন এবং পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছে টিআইবি। ছবি : সংগৃহীত
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে পাঁচ দফায় জাতীয় নির্বাচন এবং পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছে টিআইবি। ছবি : সংগৃহীত

রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে পাঁচ দফায় জাতীয় নির্বাচন এবং পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রোববার (২ জুন) প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে টিআইবির পক্ষ থেকে এ কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন একদিনে না করে পাঁচ দফায় করার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশন ও আমাদের একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, জবাবদিহিমূলক সুশাসনকে প্রধান্য দিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি নির্বাচন সামনে রেখে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। একাদশ সংসদের পুরো মেয়াদের একটি বিশ্লেষণ আমরা সম্প্রতি প্রকাশ করেছি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হলফনামার তথ্য এবং আয়করের তথ্য বিশ্লেষণের সুযোগ আমাদের হয়েছিল। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে ১ হাজার ৪১২ জন প্রার্থী ছিল, তার মধ্যে মাত্র ৪৭ জন আয়কর রিটার্ন দিয়েছেন। তার মধ্যে মাত্র ৪২ জন কর দিয়েছেন। এ ধরনের তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে আমরা সংশ্লিষ্ট নজরদারি সংস্থাগুলোর জন্য জবাবদিহি নিশ্চিতের সুবিধা আমরা করে দিয়েছি।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিশ্লেষণমূলক তথ্য টিআইবি প্রকাশ করেছে বলে জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, কমিশন (ইসি) আমাদের গবেষণা প্রতিবেদনগুলো গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আমাদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে উৎকর্ষ বিকাশের সুযোগ পান বলে আমাদের জানিয়েছেন। নির্বাচন কেন্দ্রিক জাতীয় প্রত্যাশার জায়গায় আমরা একই নৌকার যাত্রী হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করেছি। নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়, এটা আমরাও চাই। আমাদের কাজের পদ্ধতি এবং ক্ষমতার পার্থক্য থাকলে গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই। এজন্য আমরা একে অপরের সহযোগী হিসেবে নিজেদের বিবেচনা করছি।

নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো দরকার- কমিশনের কাছে এমন সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশেষত, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব প্রণয়ন। ইসিও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। তারা পরামর্শ দিয়েছে এটির আরও চাহিদা সৃষ্টি করা দরকার।

গত সংসদ নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে তা ক্ষমতাসীন দলের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এ বিষয়ে ইসিও একমত পোষণ করেছে। তারা জানিয়েছে, যতটুকু সক্ষমতা ছিল, সে অনুযায়ী কাজ করেছে। আমরা উভয় পক্ষই নির্বাচনকালীন সরকারকর্তৃক নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ- বিশেষ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়নের স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকা নিশ্চত করা যায়নি বলে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন দফায় দফায় করার বিষয়ে ইসির সঙ্গে আলচনা হয়েছে বলে জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটি উল্লেখ করেছেন, দফায় দফায় নির্বাচন আয়োজন করলে সুবিধা হত। একটি প্রস্তাব তিনি (সিইসি) করেছেন, একদিনে যে নির্বাচন হয়, সেটা পর্যায়ক্রমে করা যায় কি না। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে পাঁচ দফায় নির্বাচন করা যায় কি না- সে প্রস্তাব তিনি (সিইসি) দিয়েছেন।

‘ইভিএম সমস্যা অথবা এটিই সমাধান- আমরা এটি মনে করি না’ মন্তব্য করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে ঘাটতি রয়েছে। আমরা পেপার ট্রেইলে গুরুত্ব দিয়েছি। ইসি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো রাজি হলে পেপার ট্রেইল করা কোনও বিষয় না।

নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন যে সরকারের অধীনে হয়েছিল, সে পদ্ধতিতে ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা আমরা দেখছি না। কিন্তু যেটা সম্ভব- নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা প্রণয়ন। বিশ্বের অনেক দেশেই এটা রয়েছে। ইসি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। তবে এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোরই ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যদি না চায়, যদি মনে করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নির্বাচন করবে, তবে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না।

বর্তমানে সংসদ কার্যকর কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ তো শুরু হলো মাত্র, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আগেও বলেছি, আমরা এমন একটা সংসদ পেয়েছি, যা ক্ষমতাসীন দলের আপন ভূবন। সেখানে সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল বিষয়- বিরোধী দল বাস্তবে নেই। তার মধ্যেও আবার যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তারা বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ী। কাজেই সংসদ কতটুকু কার্যকর হবে, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হবে এবং জনকল্যাণমূলক হবে- এ প্রশ্নগুলো থেকে যাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘নির্বাচনে আমলাদেরকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে’

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

সুদ দিতে না পারায় বসতঘরে তালা, বারান্দায় রিকশাচালকের পরিবার

১০

দেশ বাঁচাতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে : চরমোনাই পীর

১১

এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি-ভাঙচুর, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১২

জেলের জালে বড় ইলিশ, ৯ হাজারে বিক্রি 

১৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৪

আগামী সংসদ প্রথম তিন মাস ‘সংবিধান সংস্কার সভা’ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব

১৫

ধরলার তীব্র ভাঙন, টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৬

নেতা ও ভোটারের জবাবদিহিই হবে শ্রেষ্ঠ সংস্কার : মঈন খান

১৭

পাপের ফল ওদের ভোগ করতেই হবে : রাশেদ খান

১৮

ক্ষমা চাইলেন স্বাধীন খসরু 

১৯

স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : আমিনুল হক

২০
X