সিলেটের বন্যাদুর্গত এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল টিম কাজ করছে। এই টিমের সদস্যরা দুর্গত মানুষকে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। রোগী পাঠাচ্ছেন হাসপাতালে। সচল রয়েছে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি। দুর্গত এলাকার হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ, ওরস্যালাইন, আই ভি স্যালাইন ও সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় অ্যান্টিভেনম মজুত রাখা হয়েছে।
এ ছাড়াও পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও জনবল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। চাহিদার অনুপাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেল থেকে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ ও সমন্বয় করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সার্বক্ষণিকভাবে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং নিয়মিত নির্দেশনা প্রদান করছে।
শুক্রবার (২১ জুন) রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুরু থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল। ঈদের পর প্রথম কর্ম দিবসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম একটি জরুরি সভা আহ্বান করেন। এরপর মাঠ পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপর থেকে বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দুর্গত মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। জেলাভিত্তিক বন্যায় স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম-
সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সমন্বয়ে মেডিকেল টিম করা হয়েছে। মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রে আগত জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে জরুরি চিকিৎসা সেবাপ্রদান এবং ওষুধ বিতরণ করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আগত জনগণকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সমন্বয়ে মেডিকেল টিম করা হয়েছে। মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রে আগত জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
সিলেট জেলার একটা বড় অংশ বন্যাকবলিত। সিলেট মহানগর এলাকার জনসাধারণও পানিবন্দি। জেলার সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে দুর্গত এলাকার ঘনবসতিপূর্ণ স্থানসমূহে ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভারি বর্ষণে জলমগ্ন হলেও স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রয়েছে। সকল জেলা হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম চলমান এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত রয়েছে। উপজেলাগুলোতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মেডিকেল ক্যাম্প গঠনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছে। বিশ্বম্ভরপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে পানি ওঠা সত্ত্বেও চিকিৎসকসহ সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বিকল্প স্থাপনায় জনসাধারণের জরুরি চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
মন্তব্য করুন