পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের ফলে দেশের অর্থনীতি একবারে ধ্বংসের কিনারায় গিয়ে পৌঁছে। আওয়ামী লুটেরা ও তাদের সহযোগী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর লোলুপ থাবায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের ব্যাংক খাত। জনগণের আমানতের টাকা নির্বিচারে লোপাটের ফলে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। গ্রাহকের প্রয়োজনীয় টাকা ফেরত দিতে হিমশিম খায় এসব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক খাত সংস্কারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ-২০২৫ পাস করে সরকার। মূলত এই আইনের বলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুর্বল পাঁচটি ইসলামী ধারার ব্যাংককে মার্জার বা একীভূত করে একটি বড় ব্যাংক গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার প্রক্রিয়া খুব দ্রুতই শুরু হবে।
ব্যাংক মার্জার কি?
ব্যাংক মার্জার বা একীভূত অর্থ হলো একাধিক ব্যাংক একত্র হয়ে একটি ব্যাংকে পরিণত হওয়া, যেখানে তাদের সম্পদ, দায়, শাখা, জনবল এবং প্রযুক্তি একীভূত করে একটি সত্তা হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন উপায়ে মার্জার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে। যেমন- কয়েকটি দুর্বল বা ছোট আকারের ব্যাংক সম্মতির ভিত্তিতে নিজেরা একত্রিত হতে পারে, একটি ব্যাংক আরেকটিকে অধিগ্রহণ করতে পারে (অ্যাকুইজিশন) অথবা আইনের বলে সরকার বা রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ব্যাংক একীভূত করে একটি ব্যাংকে পরিণত করতে পারে। বাংলাদেশে শেষেরটিই ঘটতে যাচ্ছে।
ব্যাংক মার্জারের শুরুর ইতিহাস :
বাংলাদেশে এটিই প্রথম কোনো ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে। তবে পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যাংক মার্জারের বিষয়টি অনেক পুরোনো। ১৭০০ সালের দিকে ইংল্যান্ডে বার্কলেজ ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। বার্কলেজ ১৮৯৬ সালে ২০টির বেশি ছোট ব্যাংক একীভূত করে একটি বৃহৎ ব্যাংক তৈরি করে। এটিকে ব্যাংক মার্জারের প্রাথমিক উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ শতকে ব্যাংক মার্জার ব্যাপক হারে শুরু হয়। জে.পি. মর্গান অ্যান্ড কোং এবং চেজ ম্যানহাটান ব্যাংক-এর মার্জার ছিল ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য। পরবর্তীতে ১৯৯০-এর দশকে এবং ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের সময় বহু ব্যাংক একীভূত হয়। জার্মানিতে কমার্জ ব্যাংক ও ড্রেসডনার ব্যাংক একীভূত হয়ে বড় একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। জাপানে ফুজি ব্যাংক, দাই-ইচি কাঞ্জু ব্যাংক এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক অব জাপান একীভূত করে মিজুহো ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপ গঠিত হয়। কানাডায় টিডি ব্যাংক এবং কানাডা ট্রাস্ট মিলে টিডি কানাডা ট্রাস্ট করা হয়। ভারতে বিজয়া ব্যাংক এবং দেনা ব্যাংক মিলে ব্যাংক অব বারোদা, পাঁচটি সহযোগী ব্যাংক একীভূত করে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং ওবিসি ব্যাংক ও ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়া একীভূত করে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক গঠন করা হয়।
ব্যাংক মার্জারের উদ্দেশ্যগুলো :
ব্যাংক মার্জারের উদ্দেশ্য হলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা, স্থিতিশীলতা এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতকে আরও শক্তিশালী করা। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে আর্থিক নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। এতে সুশাসন জোরদার হয় এবং আমানতকারীদের আস্থা ফিরে আসে। বাসেল-৩ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মূলধন মানদণ্ড পূরণ সহজ হয়। লোকসানে থাকা বা সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর পতন রোধ করতে মার্জারের মাধ্যমে টিকে থাকতে সহায়তা করা হয়। এছাড়া একীভবনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর প্রশাসনিক ও অপারেশনাল খরচ কমানো হয়। এক ব্যাংকের শক্তিশালী প্রযুক্তি বা মানবসম্পদ অন্য ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করার ফলে সার্বিক প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি পায়। গ্রাহক সেবা ও ডিজিটাল ব্যাংকিং উন্নত হয়। মার্জের পর বড় ব্যাংকগুলোর গ্রাহকভিত্তি, ব্র্যান্ড ইমেজ ও মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়ে। ব্যাংকগুলোর প্রোডাক্ট ও সার্ভিস একীভূত হওয়ায় গ্রাহকরা আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ সেবা পান। মার্জকৃত ব্যাংক বৃহৎ হওয়ার ফলে ঝুঁকি বণ্টন সহজ হয় এবং প্রফিটেবিলিটি বাড়ে।
ব্যাংক মার্জারের প্রক্রিয়া :
ব্যাংক মার্জারের প্রক্রিয়া অনেক জটিল ও সময়সাপেক্ষ। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে মার্জার কাজ সম্পন্ন হয়। প্রথমে ব্যাংকগুলো আর্থিক ও পরিচালন কাঠামো বিশ্লেষণ করে দেখতে হয় একীভবন লাভজনক হবে কি না। যদি লাভ জনক মনে হয়, তারপর ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ, সম্পদ, দায় ও মূলধনের অবস্থান মূল্যায়ন ও যাচাই করা হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ একীভবনের বিষয়ে আলোচনা করে এবং একীভবনের শর্তাবলি নির্ধারণ পূর্বক মার্জার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রেগুলেটরি অথরিটির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি এজিএম-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হয়। মার্জারের জন্য কাঠামোগত প্রক্রিয়ার পাশাপাশি পরিচালনগত প্রক্রিয়াও চালিয়ে নিতে হয়। ব্যাংকগুলোর সফটওয়্যার, ডেটাবেজ, অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম একীভূত করে এটিএম, অনলাইন ব্যাংকিং এবং কাস্টমার সার্ভিসসহ সকল সার্ভিস সমন্বিতভাবে চালু রাখা হয়। একই সঙ্গে জনবলের মাঝে নতুন দায়িত্ব বণ্টন করা হয় এবং শাখাগুলো একীভূত বা পুনর্বিন্যাস করা হয়। এরপর গ্রাহকদেরকে নতুন ব্যাংকিং সিস্টেম, অ্যাকাউন্ট নম্বর, চেকবই, কার্ড ইত্যাদি সম্পর্কে জানানো হয়। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর একটি নির্ধারিত তারিখে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে মার্জার কার্যকর করা হয় এবং নতুন বা একীভূত ব্যাংক পরিচালনায় আসে।
ব্যাংক মার্জারের উপকারিতা :
মার্জারের ফলে দুর্বল ব্যাংকগুলোর মূলধন ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে তারা বৃহত্তর মূলধনে বড় বিনিয়োগ ও ঋণ প্রদানে সক্ষম হয়। একীভূকরণের ফলে ব্যাংকগুলোর পরিচালন খরচ যেমন- শাখা পরিচালনা, কর্মী ব্যয় ইত্যাদি হ্রাস পায়। বড় ব্যাংকগুলো উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা ছোট ব্যাংকের সঙ্গে মার্জার হলে সবার জন্য সহজলভ্য হয়। এতে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা বিস্তৃত হয়। বড় ব্যাংকগুলোতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো ভালো থাকায় মার্জার হওয়া ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। মার্জারের ফলে গ্রাহকরা অধিক সেবা, যেমন- বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, অনলাইন সেবা, সার্ভিসের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পায়। মার্জারের ফলে ব্যাংকগুলোর প্রতিযোগিতামূলক শক্তি বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং খাতে তারা ভালো করে। দুর্বল ব্যাংকগুলো শক্তিশালী ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হলে ব্যাংকিং খাত আরও স্থিতিশীল হয়। ফলে গ্রাহক ও আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পায়।
ব্যাংক মার্জারের চ্যালেঞ্জগুলো :
ব্যাংক মার্জার একটি ইতিবাচক ও কৌশলগত পদক্ষেপ হলেও, এটি বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। একাধিক ব্যাংকের কর্মপরিবেশ, ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং অভ্যন্তরীণ সংস্কৃতি ভিন্ন হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ, সংঘাত এবং কার্যকারিতার হ্রাস ঘটতে পারে। মার্জারের ফলে একই ধরনের বিভাগ বা শাখা একত্রিত হয়, ফলে অতিরিক্ত জনবল ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি থাকে। এতে কর্মীদের মাঝে অনিশ্চয়তা ও ভয়ের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংকের আইটি সিস্টেম ও সফটওয়্যার একীভবন করা সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং জটিল প্রক্রিয়া। ভুল একীকরণ হলে গ্রাহকসেবায় বিঘ্ন ঘটে এবং ডেটা লিক বা নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়তে পারে। একীভবনের সময় ব্যাংকগুলোর হিসাব-নিকাশ, ব্যালান্স শিট ও দায়-সম্পদের সামঞ্জস্য ঘটানো অনেক সময় জটিল হয়ে পড়ে। এছাড়া মার্জারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কোম্পানি আইন, আয়কর আইন, ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিতে হয়, যা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। গ্রাহকরা নতুন ব্যাংকে আমানত ও লেনদেনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। দুর্বল ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বা আর্থিক দুর্বলতা একীভূত ব্যাংকের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদি নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনায় দূরদর্শিতা না থাকে, তবে মার্জার ব্যর্থতার দিকে যেতে পারে। এছাড়া দুর্বল ব্যাংকগুলোর পিছনে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় মার্জারে অনেক ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশে ব্যাংক মার্জারের ফলে কী ঘটতে পারে :
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, পাঁচটি ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ব্যাংক গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী জুলাই থেকে শুরু করে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ করার একটি রোডম্যাপও ঠিক করা হয়েছে। এই সাড়ে তিন মাসে ব্যাংকগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচটি টিম কাজ করবে। টিমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো থেকেও যোগ্য লোক নেওয়া হবে। একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো– সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই ৫টি ব্যাংকের মোট আমানত রয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি এবং ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের ৭৬ শতাংশ খেলাপি। এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ৯৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ৬২ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকের ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাংকগুলোর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এগুলোকে টিকিয়ে রাখতে মার্জার অথবা লিকুইডিশনের কোনো বিকল্প নাই।
পাঁচটি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক মিলে একটি শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক গঠন করার লক্ষেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। ইতোমধ্যে এসব ব্যাংকের অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ (একিউআর) সম্পন্ন হয়েছে। ঈদের ছুটির পূর্বে এসব ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান ও এমডিদের ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্জারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে। প্রথমে পূর্বের মালিকদের শেয়ার অধিগ্রহণ করে ব্যাংক সাময়িকভাবে সরকারের মালিকানায় আনা হবে। ব্যাংকের পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া সাপেক্ষে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারদের নিকট এই ব্যাংকের শেয়ারগুলো হস্তান্তর করা হবে।
পূর্বের মালিকদের অনিয়ন্ত্রিত অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে চরম দুরবস্থায় পড়লেও এসব ব্যাংকের দেশব্যাপী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও বৈচিত্রপূর্র্ণ ইসলামী ব্যাংকিং প্রোডাক্ট রয়েছে। সারাদেশে এদের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ আছে। সব মিলিয়ে একটি বড় এবং শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক হতে যাচ্ছে এটি। মার্জার জনিত কারণে কোনো ব্যাংক থেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের দরকার হবে না। তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ পাওয়াদের নতুন করে যোগ্যতা যাচাই করা হবে। আমানতকারীদের অর্থ ফেরতের জন্য ঋণ আদায় জোরদার এবং সরকার থেকে কয়েক ধাপে ব্যাংকগুলোকে টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া একই এলাকায় একাধিক শাখা থাকলে তা অন্য জায়গায় স্থানান্তর এবং কিছু শাখা বন্ধ করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ ইসলামী ব্যাংক মিলে একটি শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক গঠন করা হলে এর প্রতি সাধারণ মানুষ ও গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তত্ত্বাবধান ও কঠোর নজরদারির ফলে নতুন ব্যাংটিতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হবে। শরীয়াহ পরিপালন জোরদার হবে। বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস নিয়ে অধিক সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে এই নতুন ব্যাংক। ইসলামী শরীয়াহর উদ্দেশ্যের আলোকে বিনিয়োগ বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় আমানত স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে (এসএমই) অগ্রাধিকার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নতুন উদ্যোক্তা উন্নয়নে অবদান রাখবে ব্যাংকটি। এতে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং খাত আরো সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে। ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে আর কোনো নামধারী মালিক পক্ষ যাতে আমানতকারীদের টাকা লুট করতে না পারে সে জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫ আইনটি রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করবে।
লেখক : মো. খায়রুল হাসান একজন সার্টিফায়েড শরিয়াহ অ্যাডভাইজর অ্যান্ড অডিটর এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের হেড অব পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন্স। ই-মেইল[email protected]
মন্তব্য করুন