বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেছেন, গত ১৭ বছরে শেখ হাসিনার জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করেছি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে আর যেন কোনো স্বৈরাচার তৈরি না হয়। আর কোনো স্বৈরাচার তৈরি হবে না।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বাদ আসর মিরপুর-১২ ডি ব্লক সিরামিক গেট পানির টেংকির মসজিদে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে এ সব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক আরও বলেন, আমরা চাই, বাংলাদেশের মাটিতে একটা স্বচ্ছ, সুস্থ ও সুন্দর ধারার রাজনীতি ফিরে আসুক। যেখানে আমাদের কোনো ভাইকে গুম করা হবে না, কোনো ভাইকে হত্যা করা হবে না, কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরবে না।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় সারা দেশে বিএনপির পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়। ১৫ আগস্ট ছিল খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন।
আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার আমাকে গত ২০ জুলাই গ্রেপ্তার করে ১৩ দিন রিমান্ডের নামে শারীরিকভাবে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। চোখ বেঁধে নিয়ে হাত কড়া পরিয়েছে, শুধু আমি নই- আমাদের প্রত্যেকটি ভাইকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছে। মনে হচ্ছে, আমরা কোনো চুরি-ডাকাতি করেছি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ক্ষমতার দাপটে দখলদারি, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ এগুলো দেখতে চাই না। বাংলাদেশে এমন স্বচ্ছ রাজনীতি তৈরি হোক- যেখানে কোনো হানাহানি, কাটাকাটি থাকবে না, রক্ত ঝরবে না। গুম-হত্যা থাকবে না।
ক্ষমতার দাম্ভিকতা চিরস্থায়ী নয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতার দাম্ভিকতা করবেন না, দাম্ভিকতা করা উচিত না। আজকে দেখুন ক্ষমতার দাম্ভিকতা করে শেখ হাসিনার কীভাবে পতন হয়েছে। এটা (ক্ষমতা) চিরস্থায়ী নয়।
আমিনুল হক বলেন, আমরা বাংলাদেশে এ রকম একটা পরিবেশ চাই- যেখানে আপনারা আপনাদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে পারবেন। স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবেন। কাউকে আর ভয় পেয়ে কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সেই পরিবেশটা তৈরি করতে চাই।
দোয়া মাহফিলের পর মসজিদে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদের মধ্যে পাঁচজনের বাবা তাদের সন্তানের নিহত হওয়ার অনুভূতি-আকুতি কান্নাঝরা কণ্ঠে প্রকাশ করেন। এখানে আমিনুল হক তার বক্তব্যে শহীদদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।
এ সময় মহানগর উত্তর বিএনপির নেতা মাহাবুব আলম মন্টু, কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, পল্লবী থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হুসাইন খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ আলী গাজী, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোস্তফা মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বিকেল ৩টায় গুলশান-২ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে গুলশান থানা বিএনপির দোয়া মাহফিলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কাফরুলে থানা বিএনপির দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমিনুল হক।
এ সময় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম তেনজিং, থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আকরামুল হক, সাব্বির দেওয়ান জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তরের সব থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে দোয়া এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন