বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে ১১টি গুম-খুন হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো লোক জামিনে মুক্তি পায়, সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে গুম-খুন হাওয়া পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে সাবের হোসেনের বিচারের দাবিতে এক সমাবেশে রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন। তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় একজন খুনি কীভাবে জামিন পায়। এই এলাকায় কী রকম জুলুম নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়েছে, কতজন হাত-পা হারিয়েছে। জনির মতো তরুণ ছেলে জীবন দিয়েছে। তাকে বাড়ি থেকে তুলে এই জায়গায় নিয়ে এসে ১৬টি গুলি করে হত্যা করেছে। সাবের হোসেন চৌধুরী এর জন্য দায়ী নয় কি? তার নির্দেশেই (সাবির হোসেন চৌধুরী) ওই এলাকায় ১১ জন গুম খুনের শিকার হয়েছে। এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না।
তিনি বলেন, যার সন্তানকে খুন করা হয়েছে সেই বাবার চোখের পানি মোছার টিস্যু এখনো তৈরি হয়নি। ছাত্র আন্দোলনে এই এলাকার পাঁচজন শহীদ হয়েছে। শেখ হাসিনা গণহত্যা চালিয়েছেন। তার সহযোগী এই সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি তো শেখ হাসিনার চেতনায় লালিত-পালিত। তাদের আমলে কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে টুঁ শব্দ করতে পারেনি । বিএনপির পক্ষে, বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে, তারেক রহমানের পক্ষে কথা বলতে পারেনি। এই জন্যই তিনি (সাবের হোসেন চৌধুরী) গুম খুনের কর্মসূচি সফল করেছেন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ খুন করেছে, মামলা নেয়নি। দখলবাজি করেছে, মামলা নেয়নি। শেখ হাসিনা চাননি, তাই মামলা হয়নি। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার আন্দোলনের, জনগণের সমর্থিত সরকার। তারা যদি শেখ হাসিনার অনুসারী হয়! এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আসিফ নজরুলের মতো মানুষ আছে। তারা থাকা অবস্থায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে সাবের হোসেন চৌধুরী জামিনে মুক্তি পায়। তাহলে এই সরকার কাকে প্রোটেকশন দিচ্ছে?
রিজভী বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরী বিনা ভোটে বছরের পর বছর এমপি থেকেছেন। তার নির্দেশেই এতগুলো খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে। তিনি যদি জামিনে মুক্তি পান, তাহলে যারা অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, যেসব পুলিশ ক্রসফায়ার দিয়েছে, বাসা থেকে তুলে নিয়ে আঙুলের নখ তুলে ফেলেছে, মাথায় বন্দুক রেখে গুলি করে হত্যা করেছে-তারা তো কয়েকদিনের মধ্যে ছাড়া পেয়ে যাবে। এর উত্তর কী দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পরে সাবের চৌধুরীর গ্রেপ্তার দাবিতে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, মহানগর বিএনপি নেতা ইউনূস মৃধা, সাবেক কাউন্সিলর লিটন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, যুবদলের মেহেবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মাসুদুর রহমান, রাজু আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন