আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল ভারতে যাওয়ায় বিএনপি নেতাদের ঘুম নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন : অস্ট্রেলিয়ান কূটনীতিকের সঙ্গে নুরের বৈঠক
ওবায়দুল কাদের বলেন, চীনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্যের নেতৃত্বে কানাডায় গিয়েছে প্রতিনিধি দল। এবার আবার একটি প্রতিনিধি দল ভারতে গিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে দেখছি সুর নরম হয়ে আসছে। এক দফারও বেলা শেষ। দম ফুরিয়ে আসছে। চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে তারা। শুকিয়ে গেছে চোখ-মুখ। আমাদের প্রতিনিধিদল ভারত যাওয়ায় বিএনপি নেতাদের ঘুম নেই। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে। প্রভু নেই। ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ।’
কাদের আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড। প্রমাণ রয়েছে খুনিদের জবানবন্দিতে। তিনি ৩ নভেম্বরের মাস্টারমাইন্ড। তাদের ছেলে যুবরাজ মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পলায়ন করেছে আর রাজনীতি করবে না। চলে গেছে লন্ডনে। এখন রাজনীতি শুধু করে না, প্রতিদিনই বক্তব্য-পরামর্শ দেয়। আদালত বলেছেন তিনি দণ্ডিত তার বক্তব্য প্রচার হবে না। তারপরও তিনি কেন করে যাচ্ছেন। এটাতো আদালতেরও দেখার ব্যাপার আছে। যারা খুনের মাস্টারমাইন্ড তাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধ নিরাপদ নয়। তাদের হাতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার নিরাপদ নয়।’
খালেদা জিয়ার জন্মদিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বঙ্গমাতার জন্মদিনে আমি একটি বিষয়ে ফখরুল সাহেবের কাছে আবারও জানতে চাই, একজন মানুষের কয়টা জন্মদিন থাকে। আপনি এমন সুন্দর করে মিথ্যা কথাকে সত্য বলে বয়ান করেন। আপনার নেত্রীর ছয়টা জন্মদিন কেন, আমি সে জবাব পাইনি। আপনারা আবারও ১৫ আগস্টে জন্মদিন পালন করবেন। আর কত?’
উপস্থিতদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এ থেকে আপনারা বুঝে নেন বাংলাদেশ একটি রাজনৈতিক দল কত নিষ্ঠুর।
আমেরিকা প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে রাজনীতি কেমন হয়ে গেছে। আদর্শ, মূল্যবোধ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার কোথায়। মনে মনে ভাবি, অভাব বোধ করি। দেখেশুনে অবাক হই। যারা আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয় আমি অবাক হলাম সেই দেশে নারী কেলেঙ্কারিসহ এমন কোনো কেলেঙ্কারি নেই যে অভিযোগে অভিযুক্ত নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ বাড়ছে ততই তার পক্ষে জনমত বাড়ছে। জরিপে দেখেছি ২০২৪ এ নির্বাচন সামনে রেখে এই মুহূর্তে বাইডেন ও ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সমান সমান। এই বিষয়গুলো দেখে মাঝেমাঝে ভাবি বিশ্ব রাজনীতিতে যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মোড়ল-মাতব্বর তাদের নিজেদের দেশে গণতন্ত্র কেমন আছে। যাদের দেশে গান ফায়ার হয়, শতশত নারী-শিশুর মৃত্যু হয়। এখানে মানবাধিকারের পতাকা ভূলুণ্ঠিত কেন সেটাই ভাবি। যারা আমাদের পরামর্শ দেয়, ছবক দেয় তারা কেন ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে না। দুষ্টু ছেলে ইসরাইলকে তো কেউ কিছু বলে না। ফিলিস্তিনে রোজ রোজ শিশু, নারী, সাংবাদিকের রক্ত ঝরে। কী নিষ্ঠুরভাবে শিরিন আবু আকলিকে কর্তব্য পালনকালে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রমাণ আছে তারপরও আমি স্বীকার করব না। কারণ তারা আমার কাছের লোক, আমার আজ্ঞাবহ দেশ।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হচ্ছে। ক্যাবিনেটে প্রস্তাব পাস হয়েছে। নতুন প্রস্তাব এখনও আসেনি। সিদ্ধান্তটা সঠিক কি বেঠিক, তা জনগণের কাছে শুনব। আইনে যদি কোনো কারেকশনের দরকার হয়, সেটা আমরা করব। এটাই জনগণের সরকার।’
বঙ্গমাতা সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ নারী, তিনি বাংলার মহীয়সী নারী।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
মন্তব্য করুন