জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দেশে এখন একজনের কথাই আইন। তিনি যা বলবেন সেটাই আইনসিদ্ধ। কেউ না বললে যেন শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলল। তাই একজনের সিদ্ধান্তই এখন রায়। এমন বাস্তবতায় আমরা পড়ে গেছি। এ থেকে বাঁচতে হলে সরকার পরিবর্তন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইদানীং বিদেশিদের খুব দুর্নাম করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশিরা খারাপ উদ্দেশ্যে গণতন্ত্র ও ভোটের কথা বলছে। এসব কথার কোনো অর্থ নেই। বিদেশিরা জনগণের পক্ষেই কথা বলছে, তারা ভালো কিছু চাচ্ছে। বিভিন্ন রোগের টিকা বিদেশিরা আমাদের দিয়েছে। আবার, তারা টাকা পয়সা দিয়ে টিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নও করছে।’
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাদক ব্যবসার সঙ্গে একটি শক্তিশালী চক্র আছে। তারা বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে আছে। মাদক নিয়য়ন্ত্রণে নেই, বরং আশঙ্কাকাজনকভাবে বাড়ছে। প্রতিটি গ্রামে মাদক আছে, প্রতিটি পরিবারে মাদকসেবী আছে। অভিযোগ আছে, মাদক ব্যবসায় বিশাল অংকের মুনাফা আছে যা ক্ষমতাসীন দলের নেতা পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভাগ হচ্ছে। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। যারা অর্থের লোভে মাদক বিস্তারে সহায়তা করছে, একদিন তাদের পরিবারই মাদকের ছোবলে ধংস হয়ে যাবে। লোভ লালসার রাজনীতির জন্যও দেশে মাদকের বিস্তার কমছে না।’
জি এম কাদের বলেন, ‘সিগারেটের নামে এখন গাঁজা বিক্রি হচ্ছে। ক্রস ফায়ারের নামে দেশে বিনা বিচারে অনেক হত্যা করা হয়েছে কিন্তু মাদকের বিস্তার মোটেই কমেনি। তামাকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাক পণ্যের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের বিকল্প পেশা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশে এত অবহেলা হয় না। এখানেও অভিযোগ আছে, সরকারি দল, পুলিশ-প্রশাসন একটি বড় অংকের চাঁদা পায়। অনেক পরিবহন মালিক বলেছেন, ৫০০ টাকার টিকেট বিক্রি করতে হচ্ছে এক হাজার টাকায়। শুধু চাঁদা দিতেই এই বিশাল অংকের টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। এরাই আইন বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। একটি কথা আছে, যে সমস্যার সমাধান নেই তাকে সমস্যাই মনে করা হয় না। এখন প্রতিদিন সড়কে দুর্ঘটনা হবে, মানুষ মারা যাবে। এটাই যেন স্বাভাবিক। এখন মানুষ প্রতিদিনের দুর্ঘটনাকে নিত্যদিনের ঘটনা মনে করছে।’
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি -০২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংবাদিক বিউটি রাণী, ঢাকা আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং এর সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা, সদস্য শাহরিয়ার হোসেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, এডভোকেসি অফিসার তাসনিম মেহবুব বাঁধন, তরিকুল ইসলাম ও তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার আল তানভীর নেওয়াজ, প্রোগ্রাম অফিসার অদুত রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন