রাজধানীতে গত ২৮ জুলাই যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কথিত শান্তি সমাবেশে নৃশংসভাবে নিহত নিরীহ মাদরাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য। কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর প্রেসক্লাব চত্বরে এক ছাত্র সমাবেশে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, কথিত শান্তি সমাবেশের নামে নিরপরাধ নিরীহ মাদরাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউলকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রাজপথে নির্মমভাবে খুন করেছে। এই খুনের সঙ্গে ছাত্রলীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাশিত কোনো পদক্ষেপ দেখেনি। যা ছাত্রসমাজের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়বিচারের অধিকার রাখে। এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিবেচনায় না দেখে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং হাফেজ রেজাউলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী ছাত্রসমাজ গণ আন্দোলন গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগ। যেখানে খুন, ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি সেখানেই ছাত্রলীগ। একটি ছাত্র সংগঠনের পক্ষে নির্মমভাবে কোনো ছাত্রকে হত্যা করা সম্ভব নয়, কিন্তু শিক্ষার্থী হত্যা প্রমাণ করে বর্তমান ছাত্রলীগের আচরণ পশুর চরিত্রকেও হার মানিয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ সংগঠন বলে ঘোষণা করতে হবে।
ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদসহ সব ছাত্র নেতাদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের এই মুখপাত্র বলেন, ক্যাম্পাসে যখন ছাত্রলীগ অস্ত্রের মহড়া দেয়, শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন করে তখন প্রশাসন কাঠের চশমা পড়ে থাকে। বিরোধী মতকে দমন ও নিপীড়নের সহযোগী হিসেবে প্রশাসনের ভূমিকা আমাদের দেশের জন্য লজ্জার। অনতিবিলম্বে সব ছাত্র নেতাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ওলামায়ে কেরামের মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, এ দেশের চোর ডাকাতদের আদালতে তোলা হয় জামাই আদর করে আর উলামায়ে কেরামকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে অপমান করা হয়। এই অপমান বাংলাদেশের ছাত্র জনতা কখনোই সহ্য করে নিবে না। অনতিবিলম্বের সব নির্দোষ ওলামায়ে কেরামকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোল্লা মুহাম্মাদ খালিদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলম, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, ভাসানী ছাত্র পরিষদের আহবায়ক আহাম্মেদ শাকিল, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মিলন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী, বাংলাদেশ কওমী ছাত্র ফোরামের সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মন্তব্য করুন