হিংস্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনের পাশাপাশি এখন সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এক মহাযুদ্ধ শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
শনিবার (১৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এতে চরমোনাই পীর বলেন, ১৯৪৮-এ ইসরায়েলের জন্ম থেকেই মানবতার সঙ্গে তারা একের পর এক অপরাধ করেই যাচ্ছে। সর্বশেষ বিগত দেড় বছর ধরে পৃথিবীর শতকোটি মানুষকে সাক্ষী রেখে ফিলিস্তিনিদের ওপরে বর্বর গণহত্যা পরিচালনা করে যাচ্ছে। অবাক করার মতো বিষয় হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এই গণহত্যায় সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আরব রাষ্ট্রগুলোও নিশ্চুপ থেকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সহায়তাও করছে। নির্মম গণহত্যার এই দৃষ্টান্ত ইতিহাসে বিরল। ইসরায়েলকে প্রতিহত করার এই ব্যর্থতা গোটা বিশ্ববাসীকে কলংকিত করেছে।
তিনি বলেন, হিংস্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনের পাশাপাশি এখন সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এক মহাযুদ্ধ শুরু করেছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র ইরানের ওপরে তারা যে অসভ্য ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ইরানে নিহত সামরিক ঊর্ধ্বতন নেতারাসহ নিহত সব সামরিক-বেসামরিক জনতার প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাচ্ছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, জাতীসংঘের অস্তিত্ব এখন বিলুপ্ত করে দেওয়া উচিত। কারণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের আর কোনো সার্থকতা আছে বলে মনে হয় না। একই সঙ্গে আরব লীগ, ওআইসির মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও মৃত্যু হয়েছে। আরব রাষ্ট্রগুলোর সরকার ও সরকার প্রধানরা যে নগ্নভাবে হানাদার ইসরায়েল ও পশ্চিমা শক্তির তাঁবেদারি করেছে তাতে তারাও মুসলিম জনতার নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। এমতাবস্থায় বিশ্বের মুসলিম জনতাকে নিজেদের রক্ষায় নিজেদেরই পদক্ষেপ নিতে হবে। যার যার দেশের সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। তাদের বাধ্য করতে হবে, যাতে তারা ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
চরমোনাই পীর ইউরোপ ও আমেরিকার বুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে আপনারা রাজপথে নেমে আসুন। আপনার সরকারকে বাধ্য করুন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। না হয় ইতিহাস গোটা ইউরোপ ও আমেরিকাকে গণহত্যার সহযোগী হিসেবে সাব্যস্ত করবে।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এসেছে। এখন চলমান সংঘাত বন্ধে সব আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উত্থাপন করুন। তাতে কাজ হোক বা না হোক অন্তত আমাদের প্রচেষ্টার ছাপ থাকুক মহাকালের ইতিহাসে। কারণ সভ্যতার স্বার্থেই ইসরায়েলকে থামাতে হবে।
মন্তব্য করুন