জামায়াত-শিবিরের সমর্থকদের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
বুধবার (২৫ জুন) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ হতাশা প্রকাশ করেন।
পোস্টে পুরোনো দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তিনি। লেখেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তখন জামায়াত-শিবিরের পক্ষে অসংখ্য বক্তব্য দিয়েছি। সেসময় তো জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে বক্তব্য দেওয়া এক ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করত আওয়ামী লীগ। তবুও তারা মজলুম বিবেচনায় কথা বলেছি। এগুলো সব অনলাইনে আছে। এই গণঅভ্যুত্থানের সময় তাদের নিষিদ্ধ করা হলে, আমার স্বাক্ষরে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে থেকে বিবৃতি পর্যন্ত দিয়েছি। সেসময় কয়টা দল বিবৃতি দিয়েছে?
তিনি লেখেন, হাসিনা ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে রমজানের সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ভাইয়ের সাথে একটা ইফতার প্রোগ্রাম আমার দেখা হলে আমি তাকে বলি, সব ইসলামিক দল ইফতার প্রোগ্রাম করছে। আপনারা কেন করছেন না? একটা ইফতার প্রোগ্রাম দেন। তখন আবদুল হালিম ভাই জামায়াতে ইসলামীর আমিরের সাথে কথা বলেন। এরপর তারা শেরাটনে ইফতারের আয়োজন করেন। একই দিনে দুটো ইফতার প্রোগ্রামে দাওয়াত থাকায় আমি সেদিন এবি পার্টির ইফতারে গিয়েছিলাম। আর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জামায়াতে ইসলামীর ইফতারে অংশগ্রহণ করেন। রাতে হালিম ভাই আমাকে কল করে বললেন, আপনার কথা আমার মাথায় ঢোকে, এরপর আমি আমিরের সাথে কথা বলি। আপনাকে ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য, আল্লাহর কাছে আপনার সওয়াব পৌঁছে যাবে। কিন্তু আপনি আসলেন না যে? আমি তাকে বলি, আমাদের সভাপতি গিয়েছিল। আমি আরেকটা ইফতারে গিয়েছি। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী কোনো প্রোগ্রামে দেখা হবে। আমার যাওয়া বড় কথা নয়, এই পরিবেশে ইফতার করা দরকার ছিল....! যাইহোক, কথাগুলো কেন বললাম?
রাশেদ লেখেন, আমি রাজনীতি করি, আমার সব বক্তব্য জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের নেতাকর্মীদের সবসময় খুশি করতে পারবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮ সালের সময় আমি শিবির ট্যাগ খেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। শিবির না করেও এমন ট্যাগিংয়ের শিকার হয়ে নির্যাতনের শিকার খুব কম মানুষই হয়েছে। টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে আমাকে থামানোর বহু চেষ্টা আওয়ামী লীগ করেছে।
তিনি লেখেন, কিন্তু আজকাল লক্ষ্য করছি, (শীর্ষ বা দায়িত্বশীল নেতাদের কথা বলছি না) জামায়াত- শিবিরের কর্মী- সমর্থকরা কমেন্টে বা বিভিন্ন পেজ থেকে যে ধরনের মন্তব্য করছে, সেটি দুঃখজনক। শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, অনেকের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটছে।
রাশেদ লেখেন, বক্তব্য পছন্দ না হলে অনলাইনে যাতা মন্তব্য করার অভ্যাস পরিত্যাগ না করতে পারলে এই দেশের রাজনীতির সংস্কৃতির কোনো পরিবর্তন হবে না। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কারও বক্তব্য নিজের পছন্দ না হলে গালাগাল করা নয়, বরং গঠনমূলক জবাবের নামই গণতন্ত্র। সেই চর্চা আমাদের সবার করা উচিত। এবিষয়ে কখনোই কথা বলতে চাইনি। কিন্তু আমার কাছে মনে হলো, কিছু বলা দরকার। তাই লিখলাম।
মন্তব্য করুন