কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচন কমিশনের কাছে জামায়াতের ১৮ সুপারিশ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

নির্বাচন কমিশনের কাছে ১৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জামায়তের প্রতিনিধিদল এ সুপারিশ পেশ করে।

প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও ড. হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি), কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাড. মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন।

সাক্ষাৎকালে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের নিকট ১৮ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়।

নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বক্তব্য মনোযোগসহকারে শোনেন এবং বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দাবিগুলো যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত। কমিশন এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।’

দেশবাসীর জন্য জামায়াতের সুপারিশমালা তুলে ধরা হলো-

১. জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পরেই আগামী নভেম্বরে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।

২. উপদেষ্টা পরিষদে গৃহিত সর্বশেষ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০নং অনুচ্ছেদের সর্বশেষ সংশোধনীর বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে হবে। অন্যকোন দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না। এ বিধান বহাল রাখতে হবে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটগতভাবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্বাচনব্যবস্থা সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনই সুপারিশ করেছে। ফলে এই বিধান কোন ক্রমেই পরিবর্তন করা যাবে না। সংশোধিত বিধানই বহাল রাখতে হবে।

৩. নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. নির্বাচনী কাজের জন্য নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথা প্রিসাইডিং, পোলিং, আনসার, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. সব ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করতে হবে।

৬. সব ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৭. বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল এমন সব প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। শতভাগ লটারির ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি) নিয়োগ দিতে হবে।

৮. রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসনের অফিসারগণের সাথে সাথে সাধ্যমত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকেও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্বে সামরিক বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

১০. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করে নির্বাচনী মাঠ সমতল করতে হবে।

১১. সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়াও বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে দলীয় লোকদের রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে তা সরকারের নিকট জমা দিতে হবে।

১২. নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে থাকে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

১৩. ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত এলাকার মধ্যেই শুধু নয় বরং এর বাইরেও নির্বাচনী এলাকার যে কোনো স্থানে সন্ত্রাসী তৎপরতার খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তা দমন করতে হবে।

১৪. ছবিসহ ভোটার তালিকায় ভোটারদের ছবি পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই স্পষ্ট ছবিসহ ভোটার তালিকা পোলিং এজেন্টগণকে যথাসময়ে সরবরাহ করতে হবে।

১৫. নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং, প্রিসাইডিং অফিসার, আনসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট প্রদানের সুযোগ দিতে হবে।

১৬. প্রবাসী ভোটারদের ভোট প্রদানের পদ্ধতি সহজ করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট যে কোনো একটির মাধ্যমে ভোট প্রদানের সুযোগ দিতে হবে। রেজিস্টার্ড প্রবাসী ভোটারদের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে।

১৭. নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করতে হবে।

১৮. ফ্যাসিস্ট আমলে নিজেদের সুবিধা মতো ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে সেগুলো এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিভেদ ভুলে ধানের শীষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ফিরোজের

ঘূর্ণিঝড় মেলিসা / ‘কোথাও যাব না’, বলছেন মহাবিপদের মুখে থাকা উপকূলবাসী

জনরোষের সৃষ্টি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না সরকার : ধর্ম উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি-কেমব্রিজের যৌথ সহযোগিতা উদ্যোগ

কৃষি গুচ্ছেই ভর্তি পরীক্ষা নেবে বাকৃবি

কোটা বাতিল করে সব শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির দাবি

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ‘গ্লোবাল মিডিয়া অ্যান্ড ইনফরমেশন লিটারেসি’ সপ্তাহ 

সরকারি চাল মজুত করেছিলেন আ.লীগ নেতা, অতঃপর...

‘রিপিট ক্যাডার’ জটিলতা কাটল, ৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত ফল এ সপ্তাহেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য মেলা অনুষ্ঠিত

১০

হাসিনা বাংলাদেশকে তার একান্ত সম্পদ মনে করেছিল : শিবির সভাপতি

১১

বগুড়ায় আফগানদের হারিয়ে বাংলাদেশের শুভসূচনা

১২

১৫ পুলিশ হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

১৩

সেনাপ্রধানের সঙ্গে যে আলোচনা হলো পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যানের

১৪

দুদকের মামলায় খালাস পেলেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান

১৫

ঢাবি / পে-স্কেলের মূল বেতন ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব

১৬

ষড়যন্ত্র করলে উৎখাত করতে এক মুহূর্ত সময় লাগবে না : বাবুল

১৭

সম্মান নিয়ে রিজেক্ট করাটাই সাহসিকতা : মিষ্টি

১৮

‘সব রোগের সমন্বিত চিকিৎসায় ইন্টারনাল মেডিসিন অপরিহার্য’

১৯

২০ বছর পর ট্রেনে চড়ে সমালোচনার মুখে কৌশানি

২০
X