

ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) প্রাক্তন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অ্যাসোসিয়েশনের (ডেজা)র উদ্যোগে ‘দ্রোহ থেকে দীপ্তিতে’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর পূর্বাচলের সি শেল পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়।
দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে জাতীয়তাবাদী আদর্শ, সংগঠনের অস্তিত্ব রক্ষা, সাংগঠনিক চর্চা ও প্রাক্তন নেতাদের বন্ধন সুদৃঢ় করার যে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চলমান ছিল- এই অনুষ্ঠানটি তারই সফল পরিণতির প্রতিচ্ছবি বহন করে। ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা ডেজার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু।
আরও বক্তব্য দেন– আইইবির সহসভাপতি প্রকৌশলী খান মঞ্জুর মোর্শেদ, এ্যাবের সাবেক মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সহসভাপতি প্রকৌশলী এ টি এম তানভীরুল হাসান তমাল, ডেজার উপদেষ্টা প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক, প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, ডেজার সহসভাপতি প্রকৌশলী নাজমুল হুদা খন্দকার, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া ও প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান নয়ন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে ডুয়েট জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দীর্ঘ সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বিগত ১৬-১৭ বছরে যে প্রতিকূলতা, রাজনৈতিক চাপ, সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ ও বাস্তব অবক্ষয় অতিক্রম করে প্রাক্তন নেতারা তাদের আদর্শে অবিচল থেকেছেন– ডেজার আজকের শক্ত ভিত্তি সেই দীর্ঘ যাত্রারই ফসল। ডেজা আজ শুধু একটি অ্যালামনাই সংগঠন নয়; বরং একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, যেখানে অতীতের সংগ্রাম, বর্তমানের সেতুবন্ধন ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রস্তুতি একই স্রোতে মিলিত হয়েছে।
তারা আরও বলেন, ডেজার সদস্যরা দেশের প্রকৌশল খাতে, সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ও জাতীয় ভাবনায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে ডেজা এখন আদর্শ, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতীয়মান। সংগঠনের এই অগ্রযাত্রাকে আরও সুসংগঠিত ও ফলপ্রসূ করতে ঐক্য, শৃঙ্খলা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ‘দ্রোহ থেকে দীপ্তিতে’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। স্মরণিকায় ডুয়েট জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতা, সংগঠনের প্রতিষ্ঠালগ্নের ঘটনাপ্রবাহ, বিভিন্ন সময়কার গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব, স্মৃতিচারণমূলক লেখা এবং সংগঠনের উন্নয়নযাত্রা সমৃদ্ধভাবে স্থান পেয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে স্মরণিকার প্রথম প্রতিলিপি অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা উপস্থিত সবার মাঝে বিশেষ উদ্দীপনা তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে ডেজার বিভিন্ন ব্যাচের শতাধিক প্রাক্তন নেতা, সদস্য, পেশাজীবী প্রকৌশলী ও শুভানুধ্যায়ীরা অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন পর সহপাঠী ও সহযোদ্ধাদের কাছে পাওয়ার আনন্দ, সংগঠনকে আরও এগিয়ে নেওয়ার আলোচনা এবং নবোদ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানের শেষাংশে সদস্যদের জন্য একটি রাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি মোটরসাইকেল প্রদান করা হয়। ডেজার এই আয়োজনে সংগঠনের ঐতিহ্য, সংগ্রাম এবং ভবিষ্যৎ পথচলার যে দৃঢ় অঙ্গীকার প্রকাশ পেয়েছে— প্রাক্তন নেতারা বিশ্বাস করেন, তা ডেজাকে আগামীদিনে আরও শক্তিশালী ও প্রভাববিস্তারী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
মন্তব্য করুন