কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সরকার পদত্যাগ না করলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে : ফখরুল

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা

সরকার পদত্যাগ না করলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখনো তো সংঘাত শুরু হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, যতদিন আপনি (শেখ হাসিনার সরকার) থাকবেন এটা আরও সংঘাতের দিকে যাবে, আরও খারাপের দিকে যাবে এবং সংঘাত আরও বাড়তে থাকবে। এখনো তো সংঘাত শুরু হয়নি

তিনি বলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে তো জনগণ রুখে দাঁড়াবে- পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে এটা। জনগণই তাদের অধিকার আদায় করবে, জনগণ তো লড়াই করে, যুদ্ধ করেই তো স্বাধীনতা এনেছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময়ে জনগণ তো লড়াই করে, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এখনো জনগণ লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে।

ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য আপনারা দয়া করে এই জায়গা থেকে সরে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের দাবি তো আমরা সেজন্যই জানিয়েছি। প্লিজ এই জায়গা থেকে সরে আসেন। এসে পদত্যাগ করেন, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের একটা সরকার নির্বাচিত করতে পারে, তাদের একটা জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে পারে- তার ব্যবস্থা করেন।

দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গত মঙ্গলবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানাতে বিএনপি মহাসচিব এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমার খান ও পরিচালক এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাজা প্রদানের বিষয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রদানের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এহেন বিবৃতি প্রদান নজিরবিহীন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ আচরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, বিচারব্যবস্থার সব পর্যায়ের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বারবরই বলে আসছি আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সম্ভব না। এটা পরীক্ষিত। আমরা পরপর দুটি নির্বাচন অতীতে করেছি এবং তাদের অধীনে যে কখনো কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না্, জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না- এ ব্যাপারে সন্দেহ কারোই থাকার কথা নয়।

তিনি আরও বলেন, তবে এবার যখন প্রধানমন্ত্রী ভিনদেশে গিয়ে বিদেশিদের কাছে কথা দেন যে, খুব সুন্দর অবাধ নির্বাচন হবে, কোনো চিন্তার কারণ নাই। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন টপ অবজারভেটারি টিম পাঠিয়েছিল। এই টিমটা খুব এক্সনেটসিভলি তারা ঘুরেছেন-সব দলের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। কথা বলে যেটা তারা পরিষ্কার করে বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এখানে অবজারভার টিম পাঠানোর পরিবেশ নেই। এটা প্রমাণিত হয়ে গেল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে টিম এসেছিল সেই টিমের কথা। এ জিনিসটা নতুন করে বলে, বারবার করে বলে তো লাভ হচ্ছে না। কারণ ওনারা তো কানে দিয়েছেন তুল।

তিনি বলেন, ওদের (সরকারি দলের নেতাদের) বক্তৃতা শুনলে দেখবেন একটাই জিনিস জোর দিচ্ছে তারা যে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতেই হবে- এট দ্য কস্ট অব দ্য কান্ট্রি, এট দ্য কস্ট অব দ্য নেশন, কস্ট অব ডেমোক্রেসি।

এই যে বিষয়টা এটা কী একটা জাতি- যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, যারা লড়াই করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে- সেই জাতি কিভাবে মেনে নেবে?

ফখরুল বলেন, আমরা শত প্ররোচনার মুখেও আমরা একেবারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এত গ্রেপ্তার, মামলা, অত্যাচার নির্যাতনের পরেও। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব। এটা শেষ পরিণতি কী হবে তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর, সরকারের আচরণ কী হচ্ছে- তার ওপরে নির্ভর করবে।

দক্ষিণের সিটি মেয়রের বক্তব্যে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানসিকতাটা তার (শেখ ফজলে নূর তাপস) কথার মধ্যে পাবেন। এটা তাদের- আমি বারবার একটা কথা বলি, তাদের ক্যারেকটার, তাদের কথাবার্তা বলা সব কিছুর মধ্যে একটা প্রচণ্ড সন্ত্রাসী ব্যাপার আছে। তারপর একটা জমিদারি ভাব আছে। এটা হচ্ছে তাদের জমিদারি। এ জন্য কাকে ঢুকতে দেবে কী দেবে না- এ রকম কথা বলে। আমি এসব গুরুত্ব দেই না। এগুলো আমরা বহু ফেইস করেছি অতীতে। সেজন্য চিন্তাও করি না। কে কী বললো না বলল এটা বাংলাদেশের জনগণের যায় আসে না। বাংলাদেশের জনগণের লক্ষ্য একটাই- তারা বাংলাদেশে একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। দ্যাট ইজ দ্য পয়েন্ট।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় স্বপ্নভঙ্গ ১০ শিক্ষার্থীর

তারেক রহমানকে কটূক্তির অভিযোগে মামলার আবেদন খারিজ

হোয়াটসঅ্যাপে কেউ আপনাকে ব্লক করেছে কি না বুঝবেন যেভাবে

দুলাভাই-শ্যালকের ঋণ শোধ করে দিল হাঁস

শাহরুখের সিনেমার নকল শাকিবের ‘সোলজার’?

নাশকতাকারীদের গুলি করার নির্দেশ নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য

বরগুনায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

মুশফিক-লিটনের শতকে ৪৭৬ রানে থামল বাংলাদেশ

ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড কি ভুলে গেছেন, দেখে নিন সমাধান

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বিচারকদের হত্যার হুমকি, গ্রেপ্তার ১

১০

সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা, কমবে তাপমাত্রা

১১

পুকুরে ডুবে প্রাণ গেল ২ ভাইবোনের

১২

আমার খুব কান্না আসছে : মিথিলা

১৩

জমকালো আয়োজনে ‘যমুনা এসি বিজনেস সামিট ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

১৪

পেটব্যথা? হতে পারে এই ৬ রোগ

১৫

রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা ঘিরে ট্রাইব্যুনালে হট্টগোল 

১৬

‘অভিশপ্ত নীলকুঠি’ এখন অবহেলায় জরাজীর্ণ

১৭

সৌদির অনুরোধে সুদান যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের উদ্যোগ

১৮

অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের জন্য অস্ট্রেলিয়ার একাদশ ঘোষণা

১৯

এই রায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে : বদিউল আলম মজুমদার

২০
X