আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের আন্দোলনে ভীত হয়ে ‘তলে তলে আপসের কথা বলে মিথ্যাচার করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘দিল্লীর সাথে আপস হয়ে গেছে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আজ বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক পেশাজীবী কনভেনশনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে তারা (সরকার) এতো বেশি ভীত হয়েছে, এতো বেশি পাজেলড হয়েছে যে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন যে, ভয় নাই ভয় নাই- তলে তলে আপস হয়ে গেছে। তাহলে স্বীকার করলেন যে, এখন পর্যন্ত ভয়ে ছিলেন, আপস হয়েছে কি হয়নি- সেটা স্বীকার করলেন, বললেন। আপনাদের মতো মিথ্যা কথা পৃথিবীতে আর কেউ বলে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন- দিল্লী আছে, আমরাও আছি। আমরা আছি, দিল্লী আছে। বাহ! প্রশ্নটা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে কী বলতে চেয়েছেন? দিল্লী কি আপনাদের অপকর্মগুলো ইতোমধ্যে আপনাদের জানিয়ে দিয়েছে যে, তোমার এবারও করতে থাকো- বলছে যে, দরকার নেই নির্বাচনের। দিল্লী কি বলেছে যে, বাংলাদেশে জোর করে নির্বাচন ঘোষণা করো, তাহলে পরিষ্কার করে বলেন।
জি-২০ সম্মেলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে তাদের (সরকার) পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বললেন যে, আলোচনা হয়েছে। অথচ কোনো আলোচনা হয়নি। বৈঠকে হয়েছে, কোনো বৈঠক হয়নি। ছবি তোলার জন্য কীভাবে দৌড়াদৌড়ি করেছেন- তা সবাই দেখেছেন, জানেন। আমি সেই বিষয়ে যেতে চাই না। আমি এই কথা বলতে চাই- এবার গোটা জাতি দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধ। তারা দেশে একটা সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন দেখতে চায়।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের তৎপরতার বিষয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচন নির্বাচন করে কোনো লাভ নেই। আগে পদত্যাগ করো, সংসদ বাতিল করো, নির্দলীয় সরকার গঠন করো। তারপরে নির্বাচন হবে, তার আগে নয়।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের যৌথ উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে এই পেশাজীবী কনভেনশন হয়। এতে সারা দেশ থেকে শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কৃষিবিদ, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার দেড় সহস্রাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এবং সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, আব্দুস সালাম ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের যৌথ সঞ্চালনায় কনভেনশনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আবদুল হালিম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আবদুল কাইয়ুম, ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, কবি আবদুল হাই শিকদার, ড্যাবের অধ্যাপক ডা. গাজী আবদুল হক, অধ্যাপক ডা. একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ইউট্যাবের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, কৃষিবিদ অ্যাসোসিয়শনের রাশেদুল হাসান হারুন, সাংবাদিক ইউনিয়নের রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, শহীদুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের জাকির হোসেনসহ বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
পেশাজীবী কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জেএসডির আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদও বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন