রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের ৯ জন শীর্ষ নেতা।
আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে তারা এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজখবর নেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ এস এম জাহিদ হোসেন জোট নেতাদের স্বাগত জানান।
এদিকে গতকাল রাতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা ফের তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল এবং ঘুমিয়ে ছিলেন বিধায় নেতারা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে পাননি।
বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম সদস্য ইন্টারভনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডাক্তার শাহাবুদ্দিন তালুকদার উনার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ১২ দলের নেতাদেরকে ব্রিফিং করেন। পরে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফিং করেন।
ইব্রাহিম চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মাল্টিপ্যাল ডিজিসে আক্রান্ত। এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। বিদেশ থেকে চিকিৎসক নিয়ে এসে অপারেশন করালেও পোস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাংলাদেশে নেই বলে এ দেশে উনার আর কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেছেন, বেগম জিয়ার মতো দৃঢ় মনোবলসম্পন্ন রোগী ওনার ডাক্তারি জীবনে কখনো দেখেননি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে উনি শারীরিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এর পূর্বে ওনার প্রপার ট্রিটমেন্ট হয়নি।
মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম সকল প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে অনতিবিলম্বে বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে সরকারপ্রধানের কাছে আবেদন করেন। দেশবাসীর কাছে বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য ফরিয়াদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন আছে। ১২ দলীয় জোটের নেতারাও আশঙ্কায় আছে। আমরা ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা এসেছিলাম। সিনিয়র চিকিৎসকরা আমাদেরকে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেছেন। আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু দান করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এর সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শওকত আমিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব কাজী নজরুল ইসলামসহ জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন