রাজধানীর পৃথক চার মামলায় বিএনপির উত্তর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১৯৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে গত ৯ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৩০ মামলায় বিএনপির ৫৪৬ নেতাকর্মী দণ্ডিত হয়েছে। এর মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানার মামলায় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১২ জনের সাত বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আটজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইবুনাল-১০ এর বিচারক মো. মামুনুর রহমান সিদ্দিকী এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন-ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন আনোয়ার, হায়দার আলী বাবলা, ইমরান, সেন্টু, নাসুম।
২০১৫ সালের আট মার্চ কোতোয়ালি থানাধীন বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে হরতাল সফল করতে ককটেল বিস্ফোরণ করে আসামিরা। এতে রিকশাচালক কামাল হোসেন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নাজিম উদ্দীন ২০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার চলাকালীন সময়ে আদালত আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
যুবদলের জাহাঙ্গীরসহ ৭৫ জনের সাজা রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার মামলায় উত্তর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীরসহ ৭৫ জনের পৃথক তিন ধারায় আড়াই বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুজনের খালাস দেন আদালত।
এর আগে কারাগারে আটক জাহাঙ্গীরসহ তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অপর ৭৩ আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পলাতক আসামিদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাজা কার্যকর হবে না উল্লেখ করেন বিচারক। নাশকতার অভিযোগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়।
লালবাগ থানার মামলায় বিএনপির ৫০ জনের সাজা রাজধানীর লালবাগ থানার মামলায় পৃথক দুই ধারায় বিএনপির ৫০ জন নেতাকর্মীর তিন বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৪ জনের খালাস দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন-হাজী আলতাফ হোসেন, মোশারফ হোসেন ওরফে কালা খোকন, জামালুর রহমান চৌধুরী, শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টু, মো. সাইদুল ইসলাম, জিয়ার আলী তাইয়্যন, সাঈদ হোসেন সোহেল ওরফে ক্যাপ সোহেল, হাজী ফয়সাল, আরমান হোসেন বাদল, মো. জুম্মন, ফয়সাল আহম্মেদ, মো. তাজু, মো. রাসেল, রমজান আলী, মো. জিয়া, তাসাদ্দেক হোসেন বাবলু, মো. শাসীম ও মুজিবুর রহমান। নাশকতার অভিযোগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়।
বংশাল থানার মামলায় ৬২ নেতাকর্মীর সাজা রাজধানীর বংশাল থানার মামলায় বিএনপির ৬২ নেতাকর্মীকে পৃথক দুই ধারায় সাড়ে তিন বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী এ রায় ঘোষনা করেন। পাশাপাশি তাদের চার হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নাশকতার অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বংশাল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
মন্তব্য করুন