মহান বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলমীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু বিভেদ ও প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে আজও আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। জাতীয় বিভক্তি এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্বাধীনতার ৫২ বছরের পরেও আমরা একে অন্যকে দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করি, যা দুঃখজনক। অবস্থা এমন প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশে আর দালাল ছাড়া কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। অথচ ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আমরা এতদিনে সমৃদ্ধ জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম।
তিনি বলেন, মূলত, দেশে অবাধ গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনাউত্তর সময়ে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরাই দেশে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। তারা আবারও নতুন করে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের মাগফিরাতের জন্য দোওয়া করেন।
তিনি আরও বলেন, বিজয় কখনো বিজয়ী শক্তিকে প্রতিহিংসা পরায়ন করে তোলে না বরং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে পুনর্গঠন করা তাদের দায়িত্ব হয়ে যায়। মক্কা বিজয়ে পর মহানবী (সা.) কোনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি বরং সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে মক্কাকে একটি উন্নয়নের মডেলে পরিণত করেছিলেন। আর কোনো বিজয়ে বাড়াবাড়ি করার কোনো সুযোগ নেই বরং বিজয়ে অধিক উল্লসিত না হয়ে আল্লাহ তায়ালার তসবীহ পাঠ, পবিত্রতা বর্ণনা, সবাইকে ক্ষমা এবং তাওবা ইস্তিগফার পড়াইয় বিজয়ীদের কাজ।
তিনি ফিলিস্তিন ও গাজার যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বর্বর জায়নবাদীরা ফিলিস্তিনের গাজায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কিন্তু এ যুদ্ধে তাদের পরাজয় অনিবার্য। মুসলমানরাই এই যুদ্ধে বিজয়ী হবেন-ইনশাআল্লাহ। সূরা বনী ইসরাইলী আল্লাহ মুসলমানদের এমন সুসংবাদই দিয়েছেন। তিনি মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সব ধরনের জনমত গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসা বলেন, দেশে গণতন্ত্রের নামে তামাশাতন্ত্র চলছে। অবাধ গণতন্ত্র, সাম্য ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা হলেও সরকার এসব পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই এই মাফিয়া সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সবাইকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন