রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনগণের গণআন্দোলনকে দমন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
তারা বলেছেন, গত ১৫ বছর ধরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমনপীড়নের পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত ২৮ অক্টোবর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে সারাদেশে গণগ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে সারাদেশ থেকে প্রায় অর্ধলক্ষ বিএনপি-জামায়াত, ১২ দলীয় জোটসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন এবং কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিলপরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন ১২ দলীয় জোটের নেতারা। এর আগে একদফা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী চলমান হরতালের সমর্থনে প্রেসক্লাব, কাকরাইল ও বিজয়নগর এলাকায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল হয়।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খান বলেন, এই দেশের মাটি আন্দোলনের জন্য উর্বর। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এ দেশের জনগণের আন্দোলন সব সময় সফল হয়েছে। এবারও দেশের জনগণ এই সরকারের পতন ঘটিয়ে আবারও সফল হবে।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সহসভাপতি ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ প্রধান বলেন, সরকারি নানা চাপ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে এভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায় না।
‘সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের একরাতে বিএনপির সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দেওয়া হবে’-এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপি'র হাজার হাজার নেতাকর্মীকে যে পরিকল্পিতভাবেই জেলে ঢুকানো হয়েছে, কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেই সত্য বেরিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহকে নির্বাচনে আনার চাপ তৈরি করতেই যে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কৃষিমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারে তাও পরিষ্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের পাতানো নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে না। জনগণ এখন তাদের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ফেরত চায় এবং এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মো. ফারুক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে এই সরকার আবারও একতরফা, পাতানো, ডামি নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এবার দেশে এ ধরনের কোন নির্বাচন হবে না। জনগণ এ ধরনের কোন নির্বাচন হতে দেবে না।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব এম এ বাশার, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ,বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামি ঐক্য জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রেজা।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) হান্নান আহমেদ বাবলু, কাজী মো. নজরুল, শেখ ফরিদ উদ্দিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামী বাংলাদেশের আতাউর রহমান খান, এম এ কাশেম ইসলামাবাদী, মাওলানা খায়রুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সারোয়ার আলম, মো. মনসুর আলী ভূঁইয়া, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মো. হুমায়ুন কবির, শরীফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, মাহিদুল ইসলাম আসাদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আবু মো. আবু হানিফ, ইউসুফ সুমন, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, যুব জাগপার নজরুল ইসলাম বাবলু, এলডিপি যুবদলের মিজানুর রহমান পিন্টু, ছাত্রসমাজের কাজী ফয়েজ আহমেদ, মেহেদী হাসান, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের নিজাম উদ্দিন আল আদনান, হাফেজ খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের, মোসতাকিম আহমেদ, মো. হাবিবুল্লাহ, প্রমুখ।
মন্তব্য করুন