দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের কারণে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে সিরাজুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দিয়েছে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন। অন্যদিকে পাল্টা চিঠিতে স্বপদে বহাল রয়েছেন মর্মে সিরাজুল ইসলামকে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (বীরপ্রতীক) বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. কামরুজ্জামানের মতবিনিময় সভায় হুমকি প্রদান করেন যে, ‘নৌকার লোকেরা পালাবার পথ খোঁজে পাবে না’। যা টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। যা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ, দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। সংগঠন বিরোধী এহেন কার্যক্রমের কারণে তাকে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধাারার ১১ উপধারা মোতাবেক কেন দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না? এই মর্মে পত্র প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে নিম্ন স্বক্ষরকারীর নিকট লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে ।’
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক করার লক্ষ্যে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং সমর্থন করার বিষয়ে দলীয়ভাবে কোনো বিধিনিষেধ নেই।’
পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে অরও বলা হয়, ‘নরসিংদী-১ সদর আসনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোথাও কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি বিধায় সকল নেতাকর্মীরা উন্মুক্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ, সমর্থন করা প্রত্যেকের নিজ নিজ অধিকার। এ বিষয়ে কোনো দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বিধায় তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত সভাপতির একক ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত যা গ্রহণযোগ্য বা কার্যকর নয়। সুতরাং আপনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।’
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি.এম. তালেব হোসেন বলেন, সাধারণ সম্পাদক তো নিজেই নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। আমি সভাপতি হিসেবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিরাজুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়েছি। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে তিনি নৌকার বিপক্ষে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থন কোনোটাই করতে পারেন না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাধবদী হলরুমে সম্প্রতি সিরাজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুলের নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একপর্যায়ে বলেন নৌকার সমর্থকরা এবার পালানোরও জায়গা পাবে না। মুহূর্তেই তার এ বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন