দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুবারের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতীকের আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক। আতাউর রহমান দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী কাজের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত রয়েছেন। বিপরীতে বর্তমান এমপি মোরশেদ নিজ উপজেলার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভীত নষ্ট করা, কর্মীদের অবমূল্যায়ন, স্বেচ্ছাচারিতা, পরিবারতন্ত্র এবং নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। ফলে এবারের নির্বাচনে সর্বস্তরের সাধারণ ভোটাররা মানিকের কাঁচি প্রতীকের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। ফলে নির্বাচনে হারার পথেই হাঁটছেন মোরশেদ আলম।
ভোটাররা জানান, ভোটের সময় কয়েকটা দিন এলাকায় থাকলেও ভোট শেষে এলাকায় না এসে পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ থানায় অবস্থিত মোরশেদ আলম কমপ্লেক্স বসে নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করে আবার ঢাকায় চলে যেতেন এ প্রার্থী। হাতে গোনা কয়েকজন নেতাকে তিনি গুরুত্ব দিলেও সাধারণ মানুষ তাকে বিপদে আপদে কাছে পায়নি। এজন্য ত্যক্ত-বিরক্ত ভোটাররা এবার তাকে আর এমপি হিসেবে দেখতে চায় না।
এদিকে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান মানিকের জনসমর্থন। ভোটে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী অংশ না নেওয়ায় তাদের সমর্থকরাও মানিকের পক্ষে রয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোটও পাবেন মানিক। আওয়ামী লীগের মাঝে যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে, ভোটে সে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ আতাউর রহমান মানেকর নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে বড় ব্যবধানে পরাজিত হতে পারেন নৌকার প্রার্থী মোরশেদ।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-২ আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলম (নৌকা), স্বতন্ত্র মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া (কাঁচি), জাসদের নাইমুল আহসান (মশাল), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রবিউল হোসাইন (ছড়ি), জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামান (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কাজী সরওয়ার আলম (হাতঘড়ি)। এই আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৬৪ জন।
সাইফুল ইসলাম নামের একজন চাকরিজীবী বলেন, আমাদের জন্য ভোট গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ভোট দিতে যাবো। এবারের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক মিলন হোসেন বলেন, ভোটের জন্য সুষ্ঠু নিরপেক্ষ পরিবেশ জরুরি। আমাদের প্রার্থী যেখানেই যাচ্ছে মানুষ সাড়া দিচ্ছে। নৌকার প্রার্থীর লোকজন নিয়মিতই হামলা ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে না।
কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের জন্য ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নাই। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটছে। আমাদের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হচ্ছে না। প্রশাসন যদি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয় তাহলে আমি জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ।
মন্তব্য করুন