বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বর্তমান সরকারের জনভিত্তি নেই, তারা শূন্যের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঈন খান বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করে দিতে চাই, ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনে এই সরকার চরমভাবে পরাজিত হয়েছে। তাদের পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে। আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন বাস্তবে এই সরকার কি আরও পাঁচ বছর থাকবে? আমি তাদের উত্তরে বলি, ১৯৯০ সালে যেদিন এরশাদ সরকার এ দেশ থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিল তার একদিন আগেও কি সেই সরকার জানত যে, এভাবে তাদের চলে যেতে হবে। জানত না। আজকে আওয়ামী লীগ তাদের যে কথাটা বলছি, জনগণই হচ্ছে এ দেশের সরকারের ভিত্তি। সেই জনগণের ভিত্তি আস্তে আস্তে সরে গেছে। আজকে আওয়ামী লীগ শূন্যের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। যে কোনো মুহূর্তে এই সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা প্রকৌশলী নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মঈন খান বলেন, আজকে আপনাদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলব, হ্যাঁ আমরা রক্ত দিয়েছি, রক্ত আরও দিতে হবে। আমরা রাজপথে আন্দোলনে রয়েছি, আমাদের রাজপথে আন্দোলনে থাকতে হবে। তবে এই আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপ্রিয় এবং নিয়মতান্ত্রিক। আমরা বিশ্বাস করি, একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এ দেশে ফিরিয়ে আনার আমাদের যে আন্দোলনের প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়া হবে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক। আমরা নিয়মনীতিতে বিশ্বাস করি। বিএনপি লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির এটাই হচ্ছে তফাৎ।
তিনি বলেন, সরকার কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয়। বাংলাদেশের সংবিধান স্পষ্টভাষায় বলে দিয়েছে, এই রাষ্ট্রের মালিক কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এই রাষ্ট্রের মালিক হচ্ছে জনগণ এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে অমোঘ বাণী তিনি বলেছিলেন, ‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস’। জনগণ তাদের সেই ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাঁচ বছরের জন্য কারও ওপরে তারা দেয়, কেননা ১৮ কোটি মানুষ তো দেশ শাসন করতে পারে না। সংসদে যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি থাকে তারা একটি সরকার গঠন করে। সেই সরকার যদি ভুল করে যে, তারা চিরদিনের জন্য ক্ষমতা পেয়ে গেছে, যেটা আজকের সরকার মনে করছে। তাহলে কিন্তু তারা মারাত্মক ভুল করবে।
মন্তব্য করুন