আগামী ১২ জুলাই ঢাকার সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন মাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজমান। অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার সচেতনভাবে গণতন্ত্রকে অসুস্থ করেছে, যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে; তাদের অসুস্থ বানিয়েছে।
সোমবার (১০ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সুস্থতা কামনা করে বিএনপির উদ্যোগে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ১২ জুলাই সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দল যার যার অবস্থান থেকে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা দেবে।
তিনি বলেন, তরুণদের দেশকে রক্ষায়, রাষ্ট্রকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। বিএনপি বাধ্য হয়ে আন্দোলন করছে। বিএনপি নির্বাচন চায়, তবে আওয়ামী লীগ বারবার নিজেদের মতো নির্বাচন করেছে। এটা আর হতে দেওয়া যায় না। আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার দেশকে অসুস্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। যেসব নেতা অসুস্থ তাদের অনেকের নামে অসংখ্য মামলা রয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। ভয়াবহ অবস্থা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ করেছে। সরকারের লক্ষ্য একটাই, বিরোধী দল ধ্বংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। সে জন্য নির্বাচনকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে অসুস্থ পরিবেশে কারাগারে ও হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। করোনা বৃদ্ধি পেলে প্রথমে হাসপাতাল, পরবর্তীতে বাসায় পাঠানো হয়। অথচ বলা হয়- দয়া করা হয়েছে। বিএনপি দয়া নয়, খালেদা জিয়ার জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ বানিয়ে রাখা হয়েছে। সরকারের সুপরিকল্পিত অশুভ উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ বানিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলাগুলো দ্রুত আদালতে এনে সাজা দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কিন্তু সরকারের নীলনকশা দেশের মানুষ ধরে ফেলেছে, এ জন্য তরুণ-যুবক-সাধারণ মানুষ মাঠে নেমে এসেছে। ১২ তারিখে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, এরপর আন্দোলনে সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার মহাপরিকল্পনা করে বিএনপি নেতাদের নানা কায়দায় নির্যাতন করে অসুস্থ বানিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা কৌশল করছে সরকার। প্রশাসনে রদবদল করা হচ্ছে। পুলিশ-ডিসিদের বদলি করা হচ্ছে অশুভ উদ্দেশ্যে। সরকারের মাস্টারপ্ল্যান এবার ব্যর্থ করে দেবে দেশের মানুষ। ১২ তারিখে বিএনপির সমাবেশ সফল করা হবে। নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে, ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে।
দোয়া মাহফিলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন