বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষের হলেও তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের।
তিনি বলেন, সব জায়গায় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। ফলে গরিব আরও গরিব হচ্ছে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে লুটপাট চলছে। দেশের মানুষের খোঁজ রাখা হচ্ছে না। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষে হতে পারে, কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি নয়।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাপা প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্বরণ সভায় এসব কথা বলেন জি এম কাদের।
সরকারি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বেছে বেছে আওয়ামী লীগের লোক বসানো হচ্ছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ হচ্ছে সরকারি দলের দুর্নীতিবাজদের সার্টিফিকেট দেওয়া যে তারা কোনো দুর্নীতি করেননি।
সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এ কথা উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগ নামে ও বেনামে সরকার হয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের সরকারের জন্য কাজ করছে। কিছু মানুষ প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে, সরকারি বিভিন্ন বিভাগে আছে, তারা আগ বাড়িয়ে বলেন, আমরা আওয়ামী পরিবার। এখন ডেমক্রেসির পরিবর্তে আওয়ামীক্রেসি চলছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সেই সরকার নির্বাচিত হতে হবে। যে সরকার নিজেই নিজের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে তাকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না। বর্তমান আওয়ামীক্রেসি দেশের ইতিহাস বদলে দিচ্ছে, আগামী প্রজন্মের জন্য একটি ভয়াবহ দেশ রেখে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তরুণ সমাজ হতাশায় মাদকাসক্ত হয়ে গেছে।
স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আকতার, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান, শেরীফা কাদের, ভাইস-চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান।
এদিকে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরপন্থিরা। চারদিনের কর্মসূচি নেওয়া হয় জাপার পক্ষ থেকে। সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যাননি জি এম কাদের ও রওশন এরশাদ। মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে নামমাত্র্য কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা ও কর্মীকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে।
মৃত্যুবার্ষিকীতে রওশনপন্থিরা জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বরণ সভার আয়োজন করে। এতে অংশ নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোটের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার মতো শক্তি আছে উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির নেতা ও রওশন এরশাদের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা রওশন এরশাদের নেতৃত্বেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেব।
মন্তব্য করুন