ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতি বিশ্লেষক ও সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী গোলাম মাওলা রনির ব্যক্তিগত গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। কে বা কারা এ হামলা করেছে তা এখনো জানা যায়নি।
মঙ্গলবার (২১ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, গোলাম মাওলা রনি নিজ বাসা থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ঢাবি ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট পর্যন্ত পৌঁছালে সেখানে অবস্থান করা কয়েকজন যুবক এসে অতর্কিতভাবে তার গাড়িতে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। হামলায় তিনিসহ তার ড্রাইভার আঘাত না পেলেও গাড়িটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম মাওলা রনি কালবেলাকে বলেন, আমার সঙ্গে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদিও পরবর্তীতে হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি নিজেই একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন।
এ সময় তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, জল্লাদের কবলে পড়ে আজ আর একটু হলেই মরতে বসছিলাম। প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার প্রাণের উপর আঘাত আসবে, অমন চিন্তা কোনোদিন মাথায় ঢোকেনি। তাই রাত-বিরেতে একাকী, পায়ে হেঁটে বা রিকশা বা উবারের মোটরসাইকেলে করে মনের আনন্দে দোয়েল চত্বর হয়ে কখনো টিএসসি বা কখনো শহীদ মিনার হয়ে নীলক্ষেত দিয়ে বাসায় ফিরেছি। অফিসে আসার ক্ষেত্রেও সর্বদা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে আসতেই শান্তি অনুভব করি।
তিনি বলেন, আমার গাড়ি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেলের স্টেশন পাড়ি দিয়ে পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখন ইউ টার্ন নেওয়ার জায়গায় ৪-৫ জন যুবক হাতুড়ি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমার গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলল। হতচকিত ড্রাইভার প্রথমে গাড়ি ব্রেক করলেন। তারপর আবার দ্রুত টান মেরে জল্লাদদের কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করলেন। হাতুড়ি বাহিনী পেছনে ছুটল আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে লাগল। অফিসে এসে আমি বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালাম। তারা বেশ আন্তরিকতা নিয়ে প্রতিকারের আশ্বাস দিলেন। আমি ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামকেও ফোন করে ঘটনা জানালাম। তিনিও সান্ত্বনা দিলেন।
গোলাম মাওলা রনি আরও বলেন, আমার কপালে আগামী দিনে কি ঘটবে তা আমি জানি না। এটা নিয়ে আমার কোনো উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠাও নেই। কারণ আমি জন্ম থেকেই ছন্নছাড়া মানুষ। জীবনের প্রতি মায়া, বেঁচে থাকার স্বপ্ন বা কোনোকিছু পাওয়ার লোভ কোনোদিন আমাকে তাড়িত করেনি। সুতরাং মরে যাওয়া বা কেউ আমাকে মেরে ফেলবে এটা নিয়ে হৈচৈ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। বর্তমানে আমার ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ। চলমান দুর্বিষহ সময়, চারদিকের হাহাকার, অভাব অভিযোগ, মানুষের আর্তনাদ ইত্যাদি বিষয় আমাকে যেভাবে আহত করে, সেখানে কেউ যদি কষ্ট করে আমাকে মারতে আসে এবং মেরে ফেলে তাহলে অনেক ঝামেলা থেকেই বেঁচে যাই।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমানকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন