সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন পুলিশকে না জানিয়ে বনানী কেন্দ্রে যাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে পলওয়েল মার্কেটে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির আয়োজনে মরিচের চারা বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দেন। ঠিক পৌনে ৪টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম বনানী ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কিছু লোকের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। পরে কেন্দ্রের বাইরে আসার পর তার ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। যখন কেন্দ্রের ভেতরে ঝামেলা হচ্ছিল তখন পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে তাকে বের করে দেয়। যেহেতু ভেতরের পরিস্থিতি দেখভাল করছিল পুলিশ, তাই বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে দায়িত্বরত সদস্যদের সম্ভবত ধারণা ছিল না। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ডিবি কার্যালয়ে হিরো আলম খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, হিরো আলম যখন বনানী কেন্দ্রে সকালে পরিদর্শনে যান তখন পুলিশ পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়। কিন্তু বিকেলে পরিদর্শনের বিষয়ে হিরো আলম পুলিশকে জানাননি। ওই কেন্দ্রে তার যাওয়ার কথাও ছিল না। পুলিশকে জানালে তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হতো। তারপরও হামলার ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ১০-১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দোষীদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এ ছাড়া আগামীতে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়াসহ যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের শেষের দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধর থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে হিরো আলম দৌড়ে পালিয়ে যান। হামলাকারীরা এ সময় তাকে পেছন থেকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে তিনি বনানীর ২৩ নম্বর সড়কে গিয়ে একটি রিকশায় ওঠেন। পরে গাড়িতে করে চলে যান। এ হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী মো. সুজন রহমান শুভ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও পড়ুন : জীবনের নিরাপত্তাহীনতার জন্য পুলিশকে দায়ী করলেন হিরো আলম এই আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৫ মাস আগে এ উপনির্বাচন হয়।
উপনির্বাচনে ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট। যদিও পরে তার ওপর হামলা ও এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন হিরো আলম। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৫০০ ভোট।
মন্তব্য করুন