কিরগিস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। রাজধানী বিশকেকে বিরোধের জের ধরে তাদের ওপর এ হামলা চালানো হচ্ছে। এ হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না পাকিস্তান ভারত বা বাংলাদেশি কোনো শিক্ষার্থীও। শনিবার (১৮ মে) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের নির্মমভাবে পেটানোর এই দৃশ্য দেখলে যে কারও গা শিউরে উঠবে। দেশটিতে ঢালাওভাবে বিদেশিদের পেটানো হচ্ছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালানো হচ্ছে পাকিস্তানিদের ওপর। দেখামাত্রই তাদের ওপর হায়নার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে স্থানীয়রা। এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ জন পাকিস্তানিকে তারা পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এ ছাড়া বহু পাকিস্তানি আহত অবস্থায় রয়েছে। নিরুপায় হয়ে যাচ্ছে তাদের দূতাবাসও।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখা যায়, বেশ কয়েকজন আহত পাকিস্তানি শিক্ষার্থীকে পুলিশি সহায়তায় চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে আতঙ্ক তাদের পিছু ছাড়ছে না। তাইতো সবার চোখ ফাকি দিয়ে যে যেভাবে পারছে কিরগিস্তান ছাড়ার চেষ্টা করছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হোস্টেল থেকে সবকিছু মাথায় করে নিয়ে বেরি যাচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী।
প্রকাশ্যে এভাবে পিটিয়ে মারাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবে কোনো কিছুতেই লাভ হচ্ছে না। স্থানীদের তাণ্ডবের কাছে সেখানকার প্রশাসনও নিরুপায় হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় নেতারা বলছেন, পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি অভিবাসী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। এর আগেও অভিবাসী আইন লঙ্ঘনের দায়ে দেড় হাজারের বেশি পাকিস্তানি ও হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে কিরগিজস্তান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন করে বাসাবাড়িতে পর্যন্ত ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না স্থানীয়দের। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দলবেঁধে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হলে হামলা চালানো হচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, গেল সোমবার (১৩ মে) স্থানীয়দের সাথে মিসরের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে বেপেরোয়া ভাবে চালানো হচ্ছে তাণ্ডব। কোনোভাবেই নিজ দেশে বিদেশিদের দেখতে চায় না কিরগিস্তানিরা।
কিরগিজস্তানে মূলত কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে। তবে তাদের ধারণা, ৬০০ থেকে ৮০০ শিক্ষার্থী আর হাজার খানেকের মতো শ্রমিক কিরগিজস্তানে রয়েছেন।
মন্তব্য করুন