ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মা-বাবা ও স্ত্রীর নামে কসম করা জায়েজ আছে?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানুষের জীবন নানা রঙে, নানা ছন্দে ভরা। কখনো হাসি-আনন্দের মুহূর্ত, আবার কখনো শোক-দুঃখের করুণ পরীক্ষা। তাই বৈচিত্র্যময় এই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে ভালো থাকার জন্য সততার কোনো বিকল্প নেই। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে রাব্বুল আলামিন বলেন, তুমি যদি সৎ থাক, আল্লাহ তোমাদের জন্য একটি পথ খুলে দেবেন এবং তোমাদের অবস্থা ভালো করে দেবেন। (সুরা আত-তাহরিম : ২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ‘তোমরা সত্য কথা বল, আল্লাহ তোমাদের জন্য একদম সৎ পথ নির্দেশ করবেন।’ (সুরা আহজাব : ৭৫)

কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা যতটা সৎ থাকি না কেন, সব সময় আমাদের কথা অন্যজন বিশ্বাস করে না। কখনো কখনো এই বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ মা-বাবা, স্ত্রী বা পরিচিতজনের নাম ব্যবহার করে কসম করেন। তবে প্রশ্ন হলো, ইসলামি শরিয়তে এটি কতটা গ্রহণযোগ্য? আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারও নামে কসম করা জায়েজ আছে?

চলুন, জেনে নিই শরিয়তের ভাষ্য—

ইসলামে কসম শুধু আল্লাহর নামেই করতে হয়। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর নামে কসম করা হারাম। ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, অনেকে মা-বাবা কিংবা অন্য কারও নামে কসম কাটেন। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেশের মাটির কসম দেয়। এটা জায়েজ নয়। কসম হবে শুধু আল্লাহর নামে।

তিনি জানান, নবীজি (সা.) যদি কেউ কসম করতে চায় তাহলে সে আল্লাহর নামে কসম করবে। অন্যথায় চুপ থাকবে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) ওমর ইবনুল খাত্তাবকে (রা.) বাহনে আরোহণ করা অবস্থায় তার পিতার নামে কসম করতে দেখলেন। তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, সাবধান! আল্লাহ তোমাদের তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নইলে যেন চুপ থাকে। (বোখারি : ৬১০৮)

সাঈদ ইবনে আবু উবায়দা (রহ.) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক ব্যক্তিকে এভাবে কসম করতে শুনলেন ‘না, এ কাবার কসম!’ তখন ইবনে ওমর (রা.) বললেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করল, সে শিরক করল। (আবু দাউদ : ৩২৫১)

আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করলে ইসলামে তা কসম গণ্য হয় না। তাই তা রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা থাকে না এবং ভঙ্গ করলে কাফফারাও দিতে হয় না। এ রকম কসম যেহেতু শিরক ও হারাম কাজ তাই না জেনে এ রকম কসম করে ফেললে তাওবা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, কেউ যদি আল্লাহর নামে কোনো কসম করে পরে তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেজন্য কাফফারা দিতে হয়। কসমের কাফফারা হলো ১০ জন দরিদ্রকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো অথবা ১০ দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। এভাবে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদের দায়ী করবেন না; কিন্তু যেসব কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর, সেসবের জন্য তিনি তোমাদেরকে দায়ী করবেন।’ ( সুরা মায়িদা : ৮৯)

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন

নিজেই আক্রান্ত হাসপাতাল

জ্বর হলে জিভের স্বাদ চলে যাওয়া হতে পারে বড় রোগের লক্ষণ

মেসির জাদুতে মায়ামির নাটকীয় জয়

গাজা সিটি দখলে এগিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল

দেশ গণতন্ত্রের দিকে ফিরে যাচ্ছে : টুকু

খালি পেটে লেবুপানি কি সবার জন্য নিরাপদ? জানুন বিশেষজ্ঞরা মতামত

লোকালয়ে ঢুকে পড়ল বনের প্রাণী, জনমনে আতঙ্ক

বাসি রুটি-ঘি দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা

১৭ আগস্ট : আজকের রাশিফলে কী আছে জেনে নিন

১০

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১১

১৭ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১২

রাশিয়ার উপকূলে ভূমিকম্পের আঘাত

১৩

এসিআই পিএলসি-তে চাকরির সুযোগ

১৪

সকাল থেকে ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

১৫

পুকুরে ডুবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ২ জনের মৃত্যু

১৬

গাজীপুরে আগুনে পুড়ল ৪টি ঝুট গুদাম

১৭

নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড

১৮

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৯

১৭ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

২০
X