ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নবীজির প্রিয় কবি কে ছিলেন?

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

কাব্য-কবিতায় আরব তখন মত্ত ছিল। কাব্যচর্চা অত্যন্ত সম্মানিত দক্ষতা হিসেবে দেখা হতো সেসময়। কবিতার মাধ্যমে আরবরা কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করত। সংঘাতময় পরিস্থিতিতেও কবিতার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। উপজাতিরা সংঘর্ষে লিপ্ত হলে কবিরা তাদের উপজাতির সম্মান রক্ষা করতেন কবিতায়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ لِسِحْرًا) নিশ্চয় সুন্দর ও সাবলীল প্রকাশ ভঙ্গিতে জাদু রয়েছে। এই জাদুকে অনেকে বলেছেন, (السِّحْرُ الحَلَالُ) বা হালাল জাদু।

তাই কবি-সাহিত্যিকরা তাদের এই মোহনীয় শক্তি আর হালাল জাদু দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে। কবি ও কবিতা কালের এক মহান সাক্ষী। আমাদের প্রিয় নবী কবিতা শুনতে ভালোবাসতেন। কবি ও কবিতার প্রতি তার একটি স্বভাবসুলভ আগ্রহ ও কৌতূহল ছিল। সাহাবিদের কবিতা চর্চা করতে বলতেন তিনি। নবীজির প্রিয় কবি ছিলেন হাসসান ইবনে সাবিত। একজন আরবি কবি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনেক ভালোবাসতেন। ভালোবেসে সভাকবির আসনে বসিয়েছেন।

‘আস সুবুহু বাদাম্মিন তল আতিহি’র মতো অমর নাত ও অসংখ্য কবিতার জনক কবি হাসসান ইবনে সাবিত (রা.)। তিনি ৫৬৩ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। বনু খাজরাজ গোত্রের উত্তরসূরি এই মহান সাধক ছিলেন একজন শব্দযোদ্ধা। তিনি নবীজির সঙ্গে বেশকিছু জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। হাসসান ইবনে সাবিতের কবিতা তলোয়ারের চেয়ে কম নয়। কাফিরদের কথার জবাব তিনি কবিতার মাধ্যমে দিতেন।

হাসসান ইবনে সাবিত শৈশব থেকেই কবি হিসেবে পরিচিত। কবিতাই তার রুটিরুজির মাধ্যম ছিল। মদিনায় ইসলাম প্রচারের সূচনাতেই তিনি ইসলাম কবুল করেন। তখন তার বয়স ছিল ষাট বছর। ইবনে সাদ বর্ণনা করেন, ‘তিনি ষাট বছর জাহেলিয়াতের কবি ছিলেন আর পরবর্তীকালে ষাট বছর ছিলেন ইসলামের কবি। হাসসান ইবনে সাবিত বয়স হয়ে গেলেও কিন্তু চিন্তাচেতনায়, কাব্যপ্রতিভায় ছিলেন সিংহের মতোই শক্তিশালী। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন তিনি।’

হাসসান ইবনে সাবিতের কবিতার একটি অনুপম বৈশিষ্ট্য হলো, কবিতায় পবিত্র কোরআনের শব্দ ব্যবহার। নবীজি তার কবিতা মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। মসজিদে নববিতে তার জন্যে আলাদা একটা মিম্বারও তৈরি করা হয়েছিল। কবি সেই মিম্বারে দাঁড়িয়ে মুনাফিক, কাফিরদের নিন্দাসূচক কাব্যের জবাব দিতেন। কখনো কখনো স্বয়ং নবীজি বলতেন, ‘হে হাসসান আমার পক্ষ থেকে উত্তর দাও।’

সুন্দর ও রুচিশীল কবিতা নবীজি পছন্দ করতেন। তিনি সাবিতের জন্য আলাদা করে দোয়া করতেন। হাসসান ইবনে সাবিত (রা.)-এর কবিতা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘হে হাসসান! আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য পুরস্কার জান্নাত।’

উৎস : নবীজির প্রিয় ১০০

তথ্যসূত্র

বোখারি : ৩২১৩,৫৭৬৭, মুসলিম : ৮৬৯, আবু দাউদ : ৫০১১, তিরমিজি : ২৮৫৩

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমির হামজার দাবি নিয়ে জাবি প্রশাসনের প্রতিবাদ

ফজলুর রহমানকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলল ডাকসু

প্রেমের গুঞ্জনের মধ্যেই বিয়েতে একসঙ্গে! জায়েদ-মাহিকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

সাংবাদিকদের ‘সন্ত্রাসী’ বললেন ম্যাজিস্ট্রেট

আবারো উত্তপ্ত এশিয়া কাপ, টসে হাত মেলালেন না সূর্যকুমার ও সালমান

নেপালের পর বিক্ষোভে উত্তাল এশিয়ার আরেক দেশ

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

টস জিতে বোলিংয়ে ভারত

ঐক্যবদ্ধভাবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কাজ করতে হবে : মাহবুবুর রহমান 

হাসান মাসুদের সঙ্গে হাত মেলাতে চাননি হানিয়া আমির? যা বলছেন অভিনেতা

১০

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ

১১

বরিশালে ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩ জনের মৃত্যু

১২

চায়না রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বৈঠক

১৩

ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ডে সেরা পরিচালক মুক্তি মাহমুদ 

১৪

হত্যার পর প্রেমিকার লাশের সঙ্গে সেলফি, অতঃপর…

১৫

যশোরে বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি

১৬

মস্তিষ্ককে দীর্ঘদিন তরতাজা রাখবে যে ৫ অভ্যাস

১৭

জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার লড়াই থেকে বিএনপি সরে দাঁড়াবে না : ফারুক

১৮

গলায় কলা আটকে শিশুর মৃত্যু

১৯

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল যুক্তরাজ্যসহ ৩ দেশ

২০
X