

ঘুম মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সারাদিনের পরিশ্রম, দৌড়ঝাঁপ আর মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ ঘুমের মধ্যে প্রশান্তি খুঁজে পায়। ইসলামে ঘুমকে শুধু শরীরের বিশ্রাম নয়, বরং আল্লাহর এক বিশেষ নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী, রাত্রিকে করেছি আবরণ’। (সুরা নাবা : ৯-১০)
সুস্বাস্থ্যের জন্য রাতে নিয়মমাফিক ঘুমানো জরুরি। তবে, অনেকে ঘুমানোর সময় একদম উলঙ্গ হয়ে ঘুমান। তাই প্রশ্ন জাগে, ইসলামি শরিয়তে এটা আসলে জায়েজ কি না, এভাবে ঘুমালে গোনাহ হবে কি না।
এই প্রশ্নের উত্তরে মাদ্রাসা মারকাযুন নূর বোর্ডবাজার,গাজীপুর-এর পরিচালক মুফতি রিজওয়ান রফিকী বলেন, উলঙ্গ হয়ে ঘুমানো জায়েজ আছে। তবে নির্জনেও পূর্ণউলঙ্গ থাকা অনুচিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি জানান, হজরত মুআবিয়া (রা.) বলেছেন, ‘আমি রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞেস করলাম, আমরা সতরের কতটুকু অবলম্বন করব আর কতটুকু ছাড়ব? তিনি বললেন, তোমার স্ত্রী ও দাসী ছাড়া সকলের নিকট থেকে সতরের হিফাজত করবে। মুআবিয়া (রা.) বললেন, যদি একজন পুরুষ আরেকজন পুরুষের সঙ্গে অবস্থান করে তাহলে? তিনি বললেন, যথাসম্ভব তোমার সতর যেন কেউ না দেখে সে ব্যবস্থা করবে। আমি বললাম, যদি কোনো পুরুষ একাকী থাকে? তিনি বললেন, লজ্জা করার ক্ষেত্রে তো আল্লাহতায়ালা অধিক হকদার।’ (জামে তিরমিজি : ২৭৬৯)
এ ছাড়া ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
তোমরা নগ্নতা হতে বেঁচে থাকো। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবিন) যারা প্রস্রাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা করো এবং সম্মান করো। (তিরমিজি : ২৮০০)
উল্লিখিত হাদিসের আলোকে মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ বলেন, লজ্জা মুমিনের সহজাত। তাই প্রকৃত মুমিন কখনো পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে ঘুমাতে পারেন না। হাঁ কেউ যদি এমনটা করে ফেলেন,তবে বড় কোনো গোনাহ হবে না।
মন্তব্য করুন