মুসলিম উম্মার জন্য ঈদুল আজহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঈদে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করতে হয়। কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কোরআন-হাদিসে কোরবানির গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
এই দিনটিতে সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি করেন। রাসুল (সা.) হিজরতের পর প্রতি বছর কোরবানি করেছেন।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন। প্রতিবছরই তিনি কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১৪৪৯)
রাসুল (সা.) কীভাবে কোরবানি করতেন এবং করেছেন, এসব বিষয়ে হাদিসে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। আমরা অতি সংক্ষেপে এই ক্ষেত্রে ৩টি বিষয় জেনে রাখব। তাহলে কোরবানি আদায়ের পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর সুন্নত আদায় আমাদের জন্য সহজ হবে।
জানা না থাকার কারণে- কেউ কেউ ঈদের নামাজের আগেই কোরবানি করে ফেলে। অথচ শরিয়তে এমন কোনো বিধান নেই। উপরন্তু ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করলে, কোরবানি হবে না।
জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, নবী করিম (সা.) কোরবানির দিন (প্রথমেই) নামাজ আদায় করেন। তারপর তিনি খুতবা দেন। এরপর (কোরবানির পশু) জবেহ করেন।
তিনি ঘোষণা দেন- নামাজের আগে যে ব্যক্তি পশু জবেহ করবে, তাকে নামাজের পর আরেকটি পশু জবেহ করতে হবে...। (বুখারি, হাদিস: ৯২৮, ৬৮৮৪)
কোরবানি নিজ হাতে করা সুন্নত। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম নিজ হাতে কোরবানি করতেন। কোরবানি নিজ হাতে করলে কোরবানির পশুর প্রতি দয়ার্দ্রতা ও নিষ্ঠা বেশি করে প্রকাশ পায়।
আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তার কোরবানির পশুর ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে নিজ হাতে কোরবানি করতে দেখেছি। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৫৫)
আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করাই হলো- কোরবানির মহত্ব। এক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা হলো- পশুর ওপর মানবিকতা ও দয়ার্দ্রতা এবং বিনম্রতা প্রকাশ করতে হবে।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) (কোরবানির আগে) ছুরি ধারালো করতে এবং তা পশুর দৃষ্টির অগোচরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তোমাদের কেউ জবেহ করার সময় যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে (যাতে পশু অধিক পরিমাণে কষ্ট না পায়)। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৭২)
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) দুটি ভেড়া কোরবানি দিতেন। আর আমিও দুটি ভেড়া কোরবানি দিতাম। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি করতে ইচ্ছা করতেন, তিনি চিত্রবিচিত্র, শিংবিশিষ্ট, মোটাতাজা দুটি খাসি-ভেড়া কোরবানি দিতেন।
এর একটি তিনি ওইসব উম্মতের জন্য কোরবানি করতেন, যারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেবে ও তার দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করবে। অন্যটি তিনি নিজের ও তার পরিবারের নামে জবেহ করতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২২)
মন্তব্য করুন