আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের জীবনে আল্লাহ প্রদত্ত আনন্দের এ দিনটিতে প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর প্রতি বছরই পশু কোরবানি করা কর্তব্য। এই পশুর মধ্যে রয়েছে গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা।
হজরত মিখজাফ ইবনে সালিম রা. বলেন, আমি রাসুলকে (সা.) আরাফার ময়দানে দাঁড়িয়ে সমবেত লোকদেরকে সম্বোধন করে এ কথা বলতে শুনেছি, ‘হে লোক সকল! তোমরা জেনে রাখ, প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর প্রত্যেক বছরই কোরবানি করা কর্তব্য।
আর যার সামর্থ্য নেই তাদের ওপর কোরবানি কর্তব্য নয়। কারণ আল্লাহ কারও ওপর এমন কোনো কাজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না, যা তার সাধ্যের বাইরে।’ (তিরমিজি)
ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে কোরবানির পশুর হাট। হাটগুলোতে প্রচুর পশু আমদানি হয় এবং প্রচুর ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। তবে এ সময় ক্রেতারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন।
শুধু টাকা ছিনতাই নয়, আরও নানা সমস্যায় জর্জরিত আমাদের কোরবানির পশুর হাটগুলো। তাই সতর্ক না হলেই বিপদে পড়ার শতভাগ শঙ্কা রয়েছে আপনার। আসুন জেনে নেই, কোরবানির পশু কিনতে হাটে গেলে কী কী বিষয়ে সাবধান থাকবেন।
এক. কোরবানির হাটে বিভিন্ন জাতের পশুর পাশাপাশি মানুষের সমাগম বেশি থাকে। তাই অধিক পরিমাণে জীবাণু আর ভাইরাসও এখানে ওঁৎ পেতে থাকে। অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। এতে করে আপনি অনেকটা সুরক্ষিত থাকবেন।
দুই. আমাদের অনেকেই কোরবানির পশু কেনার আগে নিজ হাতে পশু স্পর্শ করে যাচাই করেন। মনে রাখা জরুরি, হাত দিয়ে পশু স্পর্শ করার পর কোনোভাবেই তা দিয়ে নিজের শরীরের কোনো অংশ স্পর্শ করবেন না।
তিন. নিজেকে যে কোনো জীবাণু কিংবা ভাইরাসমুক্ত রাখতে হ্যান্ড সানিটাইজার সঙ্গে রাখতে পারেন।
চার. দর কষাকষির সময় বিক্রেতার সঙ্গে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। কমপক্ষে দুজনের মধ্যে তিন ফুট দূরত্বে থাকার চেষ্টা করুন।
পাঁচ. দালাল চক্রের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকুন। তাদের খপ্পরে যেন না পড়েন সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
ছয়. হাঁটে যাবার সময় মোটা বা ভারি কাপড় পরিধান না করে বরং হালকা পোশাক পরে যান। যাতে গরমে স্বস্তি পেতে পারেন।
সাত. কোরবানির হাটে গিয়ে পশু কিনতে গেলে কখনোই রাস্তার ধারের কোনো খাবার খাবেন না। কেননা এ সময় আপনার পশু কেনার টাকা হাতিয়ে নিতে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়।
আট. কোরবানির হাটে অনেক সময় কিছু উন্মাদ পশু পাওয়া যায়। যেসব পশুকে তার মালিকও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। হাটে প্রায়ই এমন পশুদের দড়ি ছিঁড়ে আক্রমণ করতে দেখা যায়। তাই কখনোই পশুর হাটে শিশু, বৃদ্ধ কিংবা পরিবারের অসুস্থ কোনো সদস্যকে নিয়ে যাবেন না।
নয়. হাট থেকে ঘরে ফিরে হাত-পা ভালো করে সাবান, স্যাভলন বা ডেটল মেশানো পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
সর্বোপরি কোরবানির পর পশুর বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। গরুর মাংস রান্না করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেল, মশলা, চর্বি এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে মাংস থেকে চর্বি আলাদা করে কেটে ফেলুন।
সতর্ক থাকুন, নিরাপদে থাকুন এবং আপনার ঈদকে আরও আনন্দময় করে তুলুন।
মন্তব্য করুন