বিশ্বভ্রমণের অংশ হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি। বাংলাদেশ ভ্রমণের প্রথম দিনে ফটোসেশনের জন্য পদ্মা সেতুতে নেওয়া হলে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে পদ্মাপাড়ে আগত সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টায় পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের ১ নম্বর পিলারের পাশে আসে বিশ্বকাপ ট্রফি। এই ট্রফিটি এক নজর দেখতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাওয়া প্রান্তের (মুন্সীগঞ্জ এলাকা) বহু মানুষ ভিড় জমান। চোখের সামনে ট্রফিটি দেখার পরই মানুষের চোখে মুখে উন্মাদনা ফুটে ওঠে।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বকাপ ট্রফি আসার কথা ছিল বিকেল ৩টায়। কিন্তু বৈরী আবহওয়ার কারণে ট্রফি যখন পদ্মা পাড়ে পৌঁছায় তখন ঘড়িতে সোয়া ৪টা বেজে যায়। শুরুতে বিসিবির পরিকল্পনা ছিল হেলিকপ্টারে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রফি নিয়ে যাওয়া। তবে সকাল থেকেই চলমান বৃষ্টিতে সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে গাড়ি বহরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ট্রফি নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টার মতো পদ্মা সেতুর নিচের বাঁধের ওপর বিভিন্ন দিক থেকে ড্রোন, ক্যামেরা দিয়ে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন করেন আইসিসির কর্মকর্তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে কাজ করার সুবাধে পদ্মা সেতুর কাছে থাকেন মানিকগঞ্জে সোনাই মিয়া। ট্রফি আসতে দেখে চোখে মুখে উন্মাদনে ফুটে উঠে তার। কাছ থেকে ট্রফি দেখার অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘আগে তো টিভিতেই দেখতাম। প্রথমবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেলাম। অনেক ভালো লাগতেছে।’
সোনাই মিয়ার সহকর্মী শফিকুল আলম অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই অপেক্ষা করছিলাম, কখন ট্রফি আসবে। কাজের জন্যই এখানে থাকা। ভাবলাম একবার সামনে থেকেই দেখি।’
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে। সামনে থেকে সুযোগ পাওয়ায় ট্রফির সঙ্গে সেলফি তোলার হিড়িকও পড়ে যায় তাদের। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ট্রফির সঙ্গে ফটো তোলার পর বললেন, ‘এবার যদি বাংলাদেশ এটা নিয়ে আসতে পারে, তাহলেই ভালো লাগবে। আমরা চাই এবার বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের হোক।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের আইকনিক ভক্ত বলা হয় শোয়েব আলিকে। ট্রফির উন্মাদনা বাড়িয়ে দিতে পদ্মা পাড়ে এসেছিলেন তিনিও। তার বিশ্বাস এ ট্রফি বাংলাদেশেরই, ২০২৩ বিশ্বকাপ বাংলাদেশ জিতবে। শুধু শোয়েবই নয়। ট্রফি দেখতে পদ্মা পাড়ে জড়ো হয় একদল খুদে ক্রিকেটভক্তরা। নদীর পাড়ে বাড়ি হওয়াতে ট্রফি আসার খবর শুনে ছুটে আসে তারা।
সপ্তাম শ্রেণিতে পড়া মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘আমরা খবরে শুনছি বিশ্বকাপের ট্রফি আসবে। এরপর মানুষের ভিড় দেখে আমরাও ট্রফি দেখতে চলে আসি।’ দেশের ক্রিকেটের খোঁজখবর ভালোই জানেন এই খুদে সমর্থক। নিয়মিত সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের খেলা দেখেন। তিনি আরও বলেন, ‘এবার সাকিব ভাই, মুশফিক ভাইয়ের হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চাই। আমি সাকিব ভাইর ভক্ত, ওনার খেলা দেখতে অনেক ভালো লাগে। আমি চাই ওনার হাত দিয়ে বিশ্বকাপ জিতুক বাংলাদেশ।’
এরপর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জন্য দশ মিনিটের মতো উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যদিও প্রচুর ভিড়ের কারণে সুবিধামতো কাজ করতে পারেননি কেউই।
মন্তব্য করুন