‘চোকার্স’—যেন এক অভিশপ্ত শব্দ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে। বিশ্বকাপের শেষ মুহূর্তে হেরে যাওয়া, সেমিফাইনাল থেকে ফিরে আসা, ফাইনালেও বারবার ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে ‘চোকার্স’ তকমাটা গেঁথে গিয়েছিল প্রোটিয়াদের গায়ে।
কিন্তু এই লর্ডসেই সেই লজ্জার অধ্যায়ের অবসান ঘটালেন টেম্বা বাভুমা ও তার দল। ২০২৫ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বড় কোনো আইসিসি ট্রফি নিজেদের করে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুধু ট্রফি জয়ই নয়—এটি ছিল মনস্তাত্ত্বিক জয়েরও গল্প। ম্যাচ শেষে বাভুমা জানিয়েছেন, ফাইনাল চলাকালীন অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা তাদের ‘চোকার্স’ বলে স্লেজ করছিল। তবে তা আর মনোযোগ নষ্ট করতে পারেনি প্রোটিয়াদের।
‘আমরা ব্যাটিং করার সময় স্পষ্টভাবে শুনতে পাচ্ছিলাম, ওরা ‘চোকার্স’ শব্দটা ব্যবহার করছিল,’ ম্যাচশেষে বলছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক।
‘আমরা জানতাম আমাদের প্রতি অনেক সন্দেহ রয়েছে, আমাদের পথ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এই জয় সেই সব প্রশ্নের জবাব।’
ফাইনালে ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলের দুই স্তম্ভ—অধিনায়ক বাভুমা ও সহ-অধিনায়ক এডেন মার্করাম—দেখিয়েছেন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের নিদর্শন। বিশেষ করে মার্করাম, যিনি ম্যাচজয়ী শতক হাঁকিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
‘এই ‘চোকার্স’ তকমাটা মাথা থেকে নামিয়ে দেওয়া—এটাই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য,’ বলেন মার্করাম। ‘আমরা সেটা পেরেছি। এখন কেউ আর প্রশ্ন তুলতে পারবে না।’
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এই জয় ছিল কেবল একটি ম্যাচজয় নয়, বরং একটি জাতির আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার উপলক্ষ। বাভুমার কণ্ঠে সেই আশার প্রতিধ্বনি— ‘আমাদের দেশে অনেক সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এই জয় মানুষকে এক করার একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। আমরা চাই, এই জয় আমাদের দেশবাসীকে গর্বিত করুক এবং অনুপ্রাণিত করুক।’
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের কাছে হারের পর আবারও বড় মঞ্চে ফাইনাল খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা এবার আর ভুল করেনি। আর স্লেজিংয়ের উত্তরে মাঠেই জবাব দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে—প্রোটিয়ারা আর আগের মতো নেই।
মন্তব্য করুন