কেন তাকে নিয়ে এত মাতামাতি, মাত্র দুই ওভারের স্পেলে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মাহিকা গৌর। ১৬ রান দিয়ে বাঁহাতি এই পেসার শিকার করেছেন শ্রীলংকার দুই ব্যাটারকে। এতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে সহজে জয় পায় ইংল্যান্ড।
এ ম্যাচ দিয়ে ইংলিশদের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার পথচলা শুরু হয় প্রায় পাঁচ বছর আগে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে।
ক্রিকেটে একাধিক দেশের হয়ে খেলা মোটেও নতুন কিছু নয়। পুরুষদের পাশাপাশি হরহামেশই এমন ঘটনা ঘটটে নারীদের ক্রিকেটেও। কিন্তু চমকপ্রদ হচ্ছে মাহিকার বয়স। মাত্র ১৭ বছর ১৭৫ দিনে তিনি খেলে ফেললেন দুটি দেশের হয়ে!
তার ক্রিকেটার হওয়ার গল্পটাও চমকপ্রদ। ইংল্যান্ডের রিডিংয়ে জন্ম নেওয়া মাহিকা মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ক্রিকেটের প্রেমে পড়েন ভারতের জয়পুরে আইপিএলের ম্যাচ দেখে। ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে মেতে ওঠেন ক্রিকেট নিয়ে। সে বয়সে তাকে হাত ঘুরিয়ে বোলিং করতে দেখ অবাক হন তার বাবাও।
এর তিন বছর পর শুরু করেন ক্রিকেট। দুবাইয়ে আইসিসির একাডেমিতে ভর্তি হন তিনি। পরে ওই একাডেমিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক ছায়া মুঘলকে বোলিং করার সুযোগ পান তিনি।
তবে মাহিকার জন্য খুলে যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় দলের দরজা। ২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেকে হয় তার। ২০২২ সাল পর্যন্ত আরব আমিরাতের জার্সিতে ১৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন তিনি।
তবে তার জীবনের আসল নাটক শুরু হয় ২০২০ সালে। সে সময় দুবাই অনুশীলনে ছিল ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টের দল ম্যানচেস্টার অরিজিনালস। তাদের নেটে বোলিং করেন মাহিকা। তার বোলিংয়ে মুগ্ধ হন দলটির অধিনায়ক এবং পরিচালনা নির্বাহী।
সেখানে প্রকাশ পায় মাহিকা মূলত ব্রিটিশ নাগরিক। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে ২০২১ সালে আবারও ইংল্যান্ডের পাড়ি তিনি। এরপরও খেলা চালিয়ে যান আরব আমিরাতের হয়ে। চলতি বছর ল্যাঙ্কাশায়ারের নারী দল থান্ডারের হয়ে আলো ছড়ান তিনি।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার এ দলের বিপক্ষে খেলতে ডাক পান ইংল্যান্ড এ দলেও। ইংল্যান্ডের জার্সিতে মাহিকা খেলতে আগ্রহী, তা প্রকাশ পায় এতে। এরপরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ইংল্যান্ডের দলে ডাক পান মাহিকা গৌর।
ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেকের কারণে আপাতত আরব আমিরাতের ক্যারিয়ারের ইতি ঘটেছে তার। তবে একসময় সে দলে তার সঙ্গে যারা খেলেছেন, আরও ছোট থেকে তাকে দেখেছেন- তারাও মাহিকার ক্যারিয়ারের এই দিক পরিবর্তনে খুশি। ১৭ বছর বয়সেই যে মাহিকার জীবন নিয়েছে নাটকীয় সব মোড়।
মন্তব্য করুন